নিউজ ডেস্ক
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে করোনা প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রীর চাহিদা ও সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামনে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব (ইসিফোরজে) প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সহায়তা করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী তৈরির জন্য প্রতিজন উদ্যোক্তা ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন।
রোববার (১৮ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ান টিমবন ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা যুক্ত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, কেবল স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বৈদেশিক বাজারে রফতানির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারাও এ কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হবেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ কর্মসূচি একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন, ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট ও ক্লিনিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট তৈরিতে যুক্ত উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ রফতানি পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান তৈরি করা। কোভিড-১৯ এন্টারপ্রাইজ রেসপন্ড ফান্ডের (সিইআরএফ) মাধ্যমে এ ধরনের উদ্যোগ স্থানীয় ও বিশ্ববাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে উপকৃত হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ন টিমবন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এতে বিশ্ব ব্যাংকও এগিয়ে এসেছে। করোনা প্রতিরোধ সামগ্রীর উৎপাদনে নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০ জন উদ্যোক্তা এ সুবিধা পাবেন।
ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলারের রফতানি ক্ষতি হতে পারে। তবে এতে আমরা ভীত নই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবো। আমাদের মূল কাজ পণ্য ও বাজার বহুমূখীকরণ করা। ইসিফোরজে প্রকল্পের মাধ্যমে তা সহজ হবে। নতুন এ কর্মসূচিতে যোগ্য আবেদনকারীদের মধ্যে ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
সহায়তার পরিমাণ কত ?
এ সময় নতুন কর্মসূচির (উইন্ডো ফোর) বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রকল্পের এক্সপোর্ট রেডিনেস ফান্ডের (ইআরএফ) টিম লিডার ডেভ রাঙ্গানাইকালু।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচির জন্য বিনিয়োগ সহায়তা পরিমাণ হবে ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। প্রতিটি উদ্যোগে বিনিয়োগ সহায়তা পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ডলার এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ডলার। প্রস্তাবিত এ কার্যক্রম ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে। ১৮ এপ্রিল থেকেই এ কর্মসূচির যোগ্য আবেদনকারীরা বিনিয়োগ সহায়তা জন্য আবেদন করতে পারছেন।
কারা পাবেন এ বিনিয়োগ সহায়তা ?
যেসব প্রতিষ্ঠান এমপিপিই পণ্য উৎপাদন করে স্থানীয় বাজার ও রফতানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য এ অনুদান। দেশীয় ও বৈদেশিক প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে কোনো উদ্যোক্তা যদি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতায় সক্ষম হয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এমপিপিই সামগ্রী উৎপাদন করতে সক্ষম হন, তারা এ বিনিয়োগ সহায়তা জন্য বিবেচিত হবেন।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইসিফোরজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মূলত চারটি খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগী সক্ষম করে গড়ে তুলতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনুদান আবেদনকারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিভুক্ত হলে এ প্রকল্প থেকে ৬০ শতাংশ বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন। আবেদনকারীর অংশগ্রহণ থাকবে ৪০ শতাংশ। এছাড়া বৃহৎ শিল্পের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সহায়তা হবে ৫০ শতাংশ।
যেসব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে এ বিনিয়োগ সহায়তা প্রযোজ্য হবে
পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), ডাডয়াগনস্টিক ইকুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইকুইপমেন্ট। এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন ও কারিগরি মানের উন্নয়ন, প্যাকেজিং ও বৈচিত্র্য আনা এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন প্রণয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকাণ্ড যেমন, গবেষণা, পণ্য উন্নয়ন, টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এ সহায়তা প্রযোজ্য হবে।
Discussion about this post