রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় হাজী মুসা ম্যানশনের গোডাউনে মজুত রাখা কেমিক্যালের কোনও লাইসেন্স ছিল না। তবে সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স ছিল কিনা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন। শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকালে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘হাজী মুসা ম্যানশনে অনেকগুলো কেমিক্যাল গোডাউনে রয়েছে যেগুলোর কোনও বৈধতা নেই। পাউডার ও লিকুইড জাতীয় কেমিক্যাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এগুলোতে কোনও লেবেল নেই। এতে করে কেমিক্যালগুলো কোথা থেকে আনা হয়েছে বা কতদিন ধরে মজুত রয়েছে তা বলঅ যাচ্ছে না। এই বিষয়লো তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ভবনের নিচতলায় কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় এক কথায় ভবনের অন্যান্য বাসিন্দারা আগুনের মধ্যে বসবাস করে আসছিলেন। এর জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তদন্ত করে বের করবে। দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
ভবনে আরও কেউ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে তল্লাশি চালিয়েছি। কেউ ভবনটিতে নেই। সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। যারা অসুস্থ বোধ করছেন তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে।’
তিনি জানান, ভোরে ঘটনাস্থল থেকে সিকিউরিটি গার্ড রাসেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলুফার নামে ইডেন কলেজের এক শিক্ষার্থীকে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া সকাল ১০টার পর ভবনের পাঁচ তলা থেকে আরও দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে একজন ওজিউল্লাহ। অন্য জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোররাত ৩টা ১৮ মিনিটের দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলা হাজী মুসা মেনশনে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। ভবনের নিচতলায় আগুন লাগলে তার ধোঁয়ায় ভবনের দুই তলা থেকে ছয় তলার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বারান্দার গ্রিল কেটে সব ফ্লোরের লোকজনকে উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনেন। শুক্রবার সকাল ৯টার পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি দল প্রায় ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হন।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস তদন্ত কমিটি গঠন করবে। এরপরই আগুন লাগার কারণ জানা সম্ভব হবে। ফায়ার সার্ভিস তার আইন অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।’
source- BANGLA TRIBUNE
Discussion about this post