শিক্ষার আলো ডেস্ক
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী মারা গেছেন। সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান এ তথ্য জানিয়েছেন। হাসপাতালের ভেন্টিলেশন সাপোর্টে (লাইফ সাপোর্ট) চিকিৎসা নিচ্ছিলেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। পেশাগত জীবনে তিনি প্রকৌশলী ছিলেন।
এএইচএম লোকমান বলেন, ‘হাবিবুল্লাহ সিরাজীর মরদেহ সকাল ১০টায় শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে (করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে) রাখা হবে। এখানে প্রথম জানাজার পর আজিমপুর কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সেখানে দাফন করা হবে তাকে।’
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসেও কার্ডিয়াক, হজম সমস্যাসহ ফ্রোজেন শোল্ডার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। ২৭ ফেব্রুয়ারি তার হার্টে রিং পরানো হয়। পরে ২ মার্চ বাসায় ফিরেছিলেন। অসুস্থতা নিয়েই বইমেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন। পরে চলতি মাসের শুরুর দিকে ফের অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী জাতীয় কবিতা পরিষদে নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে চারবার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ৩১ ডিসেম্বর ১৯৪৮ ফরিদপুরের রসুলপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবুল হোসেন সিরাজী ও মা জাহানারা বেগম। ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে প্রকৌশল-স্নাতক (১৯৭০) ডিগ্রি লাভ করেন।
কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, বিষ্ণু দে পুরস্কার, রূপসী বাংলা পুরস্কার ও জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার পেয়েছেন।
তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘দাও বৃক্ষ দাও দিন’, ‘মোমশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি’, ‘হাওয়া কলে জোড়াগাড়ি’, ‘নোনা জলে বুনো সংসার’, ‘স্বপ্নহীনতার পক্ষে’, ‘আমার একজনই বন্ধু’, ‘পোশাক বদলের পালা’, ‘প্রেমের কবিতা’, ‘কৃষ্ণ কৃপাণ ও অন্যান্য কবিতা’, ‘সিংহদরজা’, ‘বেদনার চল্লিশ আঙুল’, ‘ম্লান, ম্রিয়মাণ নয়’, ‘বিপ্লব বসত করে ঘরে’, ‘ছিন্নভিন্ন অপরাহ্ণ’, ‘জয় বাংলা বলো রে ভাই’, ‘সারিবদ্ধ জ্যোৎস্না’, ‘সুগন্ধ ময়ূর লো’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘মুখোমুখি: তুচ্ছ’, ‘স্বনির্বাচিত প্রেমের কবিতা’, ‘হ্রী’, ‘কতো আছে জলছত্র’, ‘কতোদূর চেরাপুঞ্জি’, ‘কাদামাখা পা’, ‘ভুলের কোনো শুদ্ধ বানান নেই’, ‘একা ও করুণা’, ‘যমজ প্রণালী’, ‘আমার জ্যামিতি’, ‘পশ্চিমের গুপ্তচর’ ও ‘কবিতাসমগ্র’।
Discussion about this post