নিজস্ব প্রতিবেদক
সক্ষমতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে কিংবা সশরীরে যেকোনো দিন থেকে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
সোমবার (৩১ মে) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক বৈঠকে (ভার্চুয়াল) এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গেছে, ওই বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতির বিষয়টি থাকবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত এক উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তক্রমে আগামীকাল থেকে যেকোনো দিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে আবাসিক হল খোলা যাবে না। আবাসিক হল খুলতে হলে শতভাগ টিকাদান নিশ্চিত করতে হবে। আর দ্রুত এ টিকাদান নিশ্চিত করতে একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যাদের অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার সামর্থ্য আছে, তারা ইউজিসির সাত নির্দেশনা মেনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করতে পারবেন।
বৈঠকে অবস্থিত অন্য একজন উপাচার্য বলেন, করোনাকালীন উচ্চশিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। মঞ্জুরি কমিশন তাতে অনুমোদন দিলে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজ পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম চালাতে পারবে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে এ বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, সকল সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।
ইউজিসির দেওয়া পরীক্ষা নেওয়ার ৭ নির্দেশনা
১. যেকোনো বিষয়ের তত্ত্বীয় ব্যবহারিক পাঠদান অনলাইনে সম্পন্ন হওয়ার পর কালক্ষেপণ না করে তার চূড়ান্ত মূল্যায়ন অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। যেসব ব্যবহারিক কোর্সে হাতে-কলমে কাজ করা ছাড়া পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, সেসব কোর্স অবশ্যই সুবিধাজনক সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে সম্পন্ন করতে হবে।
২. মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সব বিষয়ের বিপরীতে শিক্ষার্থীর সত্যিকারের মেধা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে চলমান পদ্ধতি ও স্কেল গ্রেড দিতে হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ তাদের জন্য উপযোগী অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সুস্পষ্ট পদ্ধতি গ্রহণ করবে এবং বাস্তবতার নিরিখে সব সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় রেখে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করবে।
৪. যেকোনো তত্ত্বীয় বিষয় এবং হাতে-কলমে কাজ করার প্রয়োজন নেই, এমন ব্যবহারিক বিষয়ে চূড়ান্ত নম্বর অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে প্রদান করা যেতে পারে।
৫. ব্যবহারিক ক্লাসের বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের ইমেইলে এক্সপেরিমেন্টের পুরোনো ডেটা প্রেরণ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা এসব ডেটা অ্যানালাইসিস করে সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে প্রদান করবে।
৬. ল্যাবভিত্তিক নয় এমন থিসিস অনলাইনে সুপারভিশন করা যেতে পারে। ল্যাবভিত্তিক থিসিসের সুপারভিশন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনলাইনে হতে পারে। থিসিসের হার্ডকপি গৃহীত হওয়ার পর অনলাইনে ভাইভা নেওয়া যেতে পারে।
৭. অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট প্রাপ্যতা ও প্রয়োজনীয় স্পিড নিশ্চিত করা দরকার। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাতে পারে।
Discussion about this post