শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ( ১৪ জুন ) বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে অসংখ্য মানুষের প্রাণ যারা বাঁচিয়ে আসছেন, তাদের উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যেই পালিত হয় বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।
যে কোনো রোগে জরুরি অবস্থায় রক্তের চাহিদা পূরণে যারা ছুটে আসেন, তাদের জন্যই হলো বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।
১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ দিবস পালনের জন্য তাগিদ দিয়ে আসছে।
করোনার দুর্যোগ সময়েও কোয়ান্টাম ল্যাব কর্মীরা সমস্ত কার্যক্রম যথাসাধ্য চালু রেখেছেন। প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মানুষকে সেবা দিয়ে গেছেন। আর এটি সম্ভব হয়েছে মূলত স্বেচ্ছা রক্তদাতার কারণেই। কোয়ান্টামের রয়েছে তিন লক্ষাধিক রক্তদাতার একটি সুসংগঠিত ‘ব্লাড ডোনার পুল’। তবে তাদের পাশাপাশি সুস্থ সচেতন আরও মানুষকে স্বেচ্ছা রক্তদানে এখন এগিয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ, মূমুর্ষূ মানুষের রক্তের চাহিদা আরও বেশি।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এক প্রেসবিজ্ঞতিতে জানায়, কোয়ান্টাম ল্যাবে গত এক মাসে (১৪ মে-১৩ জুন ২০২১) রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ৪৫৫৬ ইউনিট। যদিও গত বছর এই সময়ে এক মাসে (১৪ মে – ১৩ জুন ২০২০) এ সংখ্যা ছিল ৩৮৯২ ইউনিট। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এই সময়ের এক মাসে সংগ্রহ বেড়েছে প্রায় ৬৬৪ ইউনিট।
২০২০ সালে সারাবছরে কোয়ান্টাম ল্যাবে রক্ত ও রক্ত উপাদানের চাহিদা ছিল ৯৭ হাজার ৬১৪ ইউনিট। এর বিপরীতে ল্যাব সরবরাহ করতে পেরেছে ৮৫ হাজার ৩৫৭ ইউনিট। চলতি বছর ১৩ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে চাহিদা ছিল ৪৩ হাজার ৭২৯ ইউনিট; এর বিপরীতে ল্যাব সরবরাহ করতে পেরেছে ৩৯ হাজার ৭১৮ ইউনিট।
২০০০ সালে শুরু করে দুই দশকের নিরলস প্রচেষ্টায় কোয়ান্টাম ল্যাব গড়ে তুলেছে তিন লক্ষাধিক রক্তদাতার একটি ডোনার পুল। এ পর্যন্ত কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম প্রায় ১২ লাখ ৯৩ হাজার রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করে মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করতে পেরেছে।
১৮ থেকে ৬০ বছরের যে কোনো সুস্থ মানুষ চার মাস পরপর নিয়মিত রক্তদান করতে পারেন। তবে পেশাদার রক্তবিক্রেতার কাছ থেকে যে রক্ত আসে, তা থেকে দেখা দিতে পারে সংক্রামক ব্যাধি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এ. বি. এম ইউনুস বলেন,’বাংলাদেশে প্রতি বছর বিভিন্ন কারণে ছয় লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু এ সকল রক্তের একটা বড় অংশ আসে পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের কাছ থেকে। তাদের দেহে অনেক সংক্রমক ব্যাধি থাকে। এ সকল জীবানু রক্ত গ্রহীতার দেহে সংক্রমিত হয় তার জীবন বিপন্ন হতে পারে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী রক্তদাতার শরীরে হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, এইচআইভি বা এইডস, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস এই পাঁচটি রোগ আছে কি-না, তা নিশ্চিত করতে হয়। এছাড়া রোগীর রক্তের সঙ্গে রক্তদাতার রক্তের গ্রুপিং এবং ক্রসম্যাচিং জরুরি।
শুধু থ্যালাসেমিয়া নয়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, দুর্ঘটনায় আহত, সন্তান প্রসব, অ্যানিমিয়া, হিমোফিলিয়া, অস্ত্রোপচার, রক্তবমি সহ বিভিন্ন সময়ে রোগীর শরীরে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন পড়ে।
Discussion about this post