শিক্ষার আলো ডেস্ক
সরকার গত জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে ঘর দেওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে একসঙ্গে আরও প্রায় ৫৩ হাজার ৩৪০টি অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর দিয়েছে ।
রোববার (২০ জুন) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দ্বিতীয় পর্যায়ে এসব পরিবারকে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমি পাকা ঘর দেওয়ার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা ঘর পেয়েছেন, তাদের কষ্ট দূর করা এবং তাদের মুখের হাসি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা মানে ভোগ বিলাস নয়। ক্ষমতা হলো মানুষের সেবা করা। মানুষের জন্য কাজ করা।
এ সময় গণভবনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং ৪৫৯টি উপজেলা প্রান্ত হতে উপকারভোগী, জনপ্রতিনিধি এবং মাঠ প্রশাসনে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সংযুক্ত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বেশ কয়েকটি এলাকার উপকারভোগী, জনপ্রতিনিধি ও মাঠ প্রশাসনে প্রজাতন্ত্রের ঊর্ধ্বতন কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস জানান, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আরও একলাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার।
একসঙ্গে এত মানুষকে বিনামূল্যে বাড়ি-ঘর দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন মন্তব্য করে আহমদ কায়কাউস বলেন, বিভিন্ন দেশে ভূমিহীন, গৃহহীনদের ঘর-বাড়ি নির্মাণের জন্য সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার নজির থাকলেও ভূমিহীন-গৃহহীনদের ডেকে এনে বিনামূল্যে তাদের বাড়ি-ঘর দেওয়ার নজির আর নেই।
অসহায় মানুষকে এভাবে ঘর দেওয়াকে ‘অর্ন্তভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব বলেন, বিশ্বে এটা নতুন মডেল, আগে কখনো কেউ এটা ভাবেনি।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বলেন, সারা বাংলাদেশে ঘরও নেই, জমিও নেই এমন পরিবারের সংখ্যা দুই লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১। ভিটেমাটি আছে, ঘর জরাজীর্ণ কিংবা ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ২৬১। গৃহনির্মাণের মাধ্যমে পুনর্বাসন করতে সারা বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারকে তালিকাভুক্ত করেছে সরকার।
দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষদের মধ্যে যাদের ভূমি নেই তাদের সরকারের খাস জমি থেকে দুই শতাংশ ভিটে এবং ঘর দিচ্ছে সরকার। যাদের ভিটে আছে ঘর নেই তাদেরও ঘর দিচ্ছে সরকার। এই দুই ক্যাটাগরির মধ্যে যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন তাদের আগের ঘর করে দিচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। প্রতিটি ঘর দুই কক্ষ বিশিষ্ট। এতে দুটি রুম ছাড়াও সামনে একটি বারান্দা, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর এবং একটি খোলা জায়গা থাকবে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ঋণপ্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয় বাড়ে এমন কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ।
Discussion about this post