নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে শ্রেণি পাঠদান শুরুর পর কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকজন শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ কারণে শ্রেণি পাঠদানে আরেকটি বিষয় যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা আপাতত হচ্ছে না। সংক্রমণ হার এখনও কম আছে বলে কোনও শিক্ষার্থী আক্রান্ত হলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে না।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক এসব কথা বলেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে মাউশি পরিচালক বলেন, দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী এক কোটি ৫ লাখের মতো। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সংক্রমিত হওয়ার খবর পাচ্ছি। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে। তবে নতুন করে আর ক্লাস যুক্ত হচ্ছে না। সংক্রমণের হার এখনও এতটাই কম যে, প্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রয়োজন নেই। লক্ষণ দেখা দিলে আইসোলেশনে নেওয়া হচ্ছে। অন্য শিক্ষার্থীদের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তাই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না। ঠাকুরগাঁওয়ের শিশুপল্লীর মাধ্যমিকের কয়েকজন শিক্ষার্থীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে দু-একদিন। তবে পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে না। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে আবারো ঐ প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে একটি গাইডলাইন জারি হয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আলোকে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। ওই এসওপিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ‘করণীয়’ ও‘বর্জনীয়’ সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারীদের সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। এদের কারও কোডিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের জন্য আসন বিন্যাস করা হচ্ছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেশিরভাগের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া হয়েছে। আইসোলেশনে থাকা শিক্ষার্থীদের উপস্থিত গণ্য করে ১৪ দিন বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ করা হচ্ছে।
অভিভাবকগণের প্রতিও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এসওপিতে। শিক্ষকরা অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সচেতন করেছেন, করছেন। সন্তানকে মাস্ক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে অভিভাবককে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সন্তানকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সন্তানকে নিজ স্বাস্থ্য সম্পর্কে (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা) সচেতন করবেন অভিভাবক। প্রতিষ্ঠানে সঠিক সময়ে পাঠানো ও বাসায় ফেরা নিশ্চিত করাতে হবে অভিভাবকদের। সন্তান অথবা পরিবারের কোনও সদস্য কোভিড আক্রান্ত হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবিলম্বে জানাবেন অভিভাবকরা।
বাসা হতে খাবার পানি ছাড়া অন্য খাবার না আসা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে বাইরের খাবার না খাওয়ার বিষয়ে সচেতন করতেও শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলায় সংক্রমণের হার আগের সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ৩০ শতাংশের বেশি হলে নিবিড় সার্ভেইল্যান্সের ব্যবস্থা করতে হবে। জেলার জন্য একটি কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করতে হবে।
Discussion about this post