অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট চার্টার্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ড. সাজিদ হোসেনের চাকরির মেয়াদ আরও দু্ই বছর (অক্টোবর ২০২১-সেপ্টেম্বর ২০২৩) পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার।
সোমবার (১১ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মেরিন একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে তিনি কমান্ড্যান্ট পদে নিয়োজিত আছেন। এর আগে তিনি ১৯৯৩-২০০৯ সালে একাডেমির ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী প্রশিক্ষক, প্রধান প্রকৌশলী ও ডেপুটি কমান্ড্যান্ট পদে এবং ১৯৮০-১৯৯৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশেনের সমুদ্রগামী জাহাজে ক্যাডেট থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বে ছিলেন।
আন্তর্জাতিকভাবে তিনি জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা আইএমও’র একজন মেরিটাইম অ্যামব্যাসেডর, ‘ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির (সুইডেন) বোর্ড অব গভর্নর্সের একজন গভর্নর, আইএমও ও গ্লোবালমেটের (অস্ট্রেলিয়া) একজন মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ, যুক্তরাজ্য ইঞ্জিনিয়ারিং কাউন্সিলের চার্টার্ড ইঞ্জিনিয়ার এবং ইনস্টিটিউট অব মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইমারেস্ট লন্ডন) একজন ট্রাস্টি, কাউন্সিল মেম্বার, ফেলো ও চার্টার্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার।
তিনি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের ছাত্র। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির (১৯৭৮-৮০, ২য় স্থান) রেজিমেন্টাল প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৮০ সালে মেরিন একাডেমির চিফ ক্যাডেট ক্যাপ্টেন ছিলেন। যুক্তরাজ্য থেকে প্রথম শ্রেণির নৌ-প্রকৌশল সনদ, ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (সুইডেন) থেকে এমএসসি ইন মেরিটাইম সেফটি (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং) ডিগ্রি অর্জন করেছেন; পেশাগত স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন সম্মানসূচক ডিএসসি ইন মেরিটাইম এডুকেশন।
দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য মা-বাবার সন্তান সাজিদ হোসেন, ১২ বছর বয়সে ৭ নম্বর সেক্টরে মধুপুর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার প্রকাশনায় রয়েছে ২৩টি বই (মুক্তিযুদ্ধ, তথ্য-প্রযুক্তি, সাইন্স ফিকশন ও সাহিত্য), ৩০টি গবেষণাপত্র এবং প্রায় ২৫০টি নিবন্ধ; মে’২০১৯-এ আইমারেস্ট লন্ডন থেকে পেয়েছেন ‘আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন মেরিন এডুকেশন ২০১৯ পুরস্কার’।
২০০৯-১৯ সময়ে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে ‘ট্র্যাডিশনাল থেকে ডিজিট্যালে’ রূপান্তর, নেভিগেশন সিমুলেটর স্থাপন, ২০১২ সালে নারী ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ, ২০১৫ সালে ৩ বছরের ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সাইন্স পাস কোর্সটি ৪ বছরের অনার্স কোর্সে উন্নীতকরণ (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির অধিভুক্তিতে) এবং ২০১৮ সালে একই ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে এমএসসি ইন মেরিটাইম সাইন্স কোর্স প্রবর্তিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে তার থিসিস ‘এ প্রপোজাল ফর এস্টাবলিশমেন্ট অব এ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ইন বাংলাদেশ’ অনুযায়ী, ২০০১-২০১৩ সময়কালের প্রয়াসে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’ এবং ২০১০-১৯ সালে চারটি নতুন মেরিন একাডেমি (রংপুর, পাবনা, বরিশাল ও সিলেটে)।
কমান্ড্যান্ট সাজিদের উদ্যোগে ও নেতৃত্বে বিগত ১০ বছরে (২০১০-২০১৯) একাডেমি অর্জন করেছে বিভিন্ন স্বীকৃতি ও সম্পর্ক: ডব্লিউএমইউ সুইডেনের শাখা থেকে পার্টনার সম্পর্কে উন্নয়ন (২০১৯), যুক্তরাজ্য মার্চেন্ট নেভি ট্রেনিং বোর্ড, আইমারেস্ট লন্ডন ও এনআই লন্ডনের স্বীকৃতি (২০১৯), অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম কলেজ, চীনের ডালিয়ান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, ভিয়েতনাম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি এবং সিঙ্গাপুর মেরিটাইম একাডেমির সঙ্গে পেশাগত সংযোগ (২০১১), ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মেরিটাইম অ্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব সিঙ্গাপুরের স্বীকৃতি (২০১৫), ভারতের তোলানি মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর (২০১৭), ডিএনভি-জিএলের মাধ্যমে আইএসও ৯০০১:২০১৫ সনদ (২০১৬) এবং সাউথ এশিয়ান বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ২০১৭।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ড. সাজিদ হোসেনের চলমান উদ্যোগে মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য মেরিটাইম অ্যান্ড কোস্টগার্ড এজেন্সির স্বীকৃতি, যুক্তরাজ্যের সাউদ্যাম্পটন সলেন্ট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর, ফিলিপাইনের মেরিটাইম একাডেমি অব এশিয়া অ্যান্ড প্যসিফিকের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর এবং কোরিয়া থেকে ফুল-মিশন মেরিন সিমুলেটর সংগ্রহ করা।
Discussion about this post