শিক্ষার আলো ডেস্ক
সমন্বিত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নিখিল রঞ্জন ধরের নাম আসায় তাকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘নিখিল রঞ্জন ধরকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে সব ধরনের পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
গত ৬ নভেম্বর থকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চাকরির প্রশ্নফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনাল টিম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— মোক্তারুজ্জামান রয়েল, শামসুল হক শ্যামল, জানে আলম মিলন, মোস্তাফিজুর রহামান মিলন ও রাইসুল ইসলাম স্বপন।
পরের দিন গ্রেফতার করা হয়— সোহেল রানা, এমদাদুল হক খোকন ও এবিএম জাহিদ নামে আরও তিন জনকে। গ্রেফতারকৃতদের পাঁচ জনই বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা। সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এই চক্রের অন্যতম হোতা দেলোয়ার, পারভেজ ও রবিউল নামে তিন জনকে। তারা তিন জনই আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। গ্রেফতারের পরদিন তিন জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তারের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে দেলোয়ার বলেছেন, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপা হওয়ার পর প্রতিবারই বুয়েটের অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর দুই সেট করে প্রশ্ন ব্যাগে ঢুকিয়ে বাসায় নিয়ে যেতেন। দেলোয়ার নিজেও একাধিকবার তার ব্যাগে প্রশ্ন ঢুকিয়ে দিয়েছেন বলে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দাবি করেছেন।
চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে বুয়েটের শিক্ষকের সম্পৃক্ততা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বুয়েট কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিলো। তবে নিখিল রঞ্জন ধর অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে জানান, তিনি প্রশ্ন অ্যাপ্রুভ হওয়ার পর ছাপা হওয়া প্রথম কপি নিজের ব্যাগে রাখতেন। তবে তা আবার ফেলে দিতেন।
তিনি ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্র বাসায় নিয়ে আসেননি। বুয়েটের এই শিক্ষক জানান, তিনি আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মৌখিক ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও পরীক্ষা নেওয়ার কাজে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতেন। এজন্যই তিনি প্রশ্নপত্র ছাপা হওয়ার সময় আশুলিয়ার আহছানিয়ার প্রেসে যেতেন। তবে তার বক্তব্যে নানারকম অসংলগ্নতা পাওয়া যায়।সৌজন্যে-বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post