নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলেও শিক্ষার্থীদের প্রথমেই একসঙ্গে সারা বছরের বইপত্র দেওয়া হবে না। প্রথমে চার মাসের বই দেওয়া হবে। এর প্রতিক্রিয়া বা ভালোমন্দ দেখে (ফিডব্যাক) তার ভিত্তিতে পরের বিষয়গুলো তৈরি করা হবে। এসবের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করে ২০২৩ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট সবার ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা হবে।
গতকাল শনিবার ‘পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম ট্রাই আউট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্বাচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট একাডেমিক সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফ্ফর আহমদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণের আয়োজক জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
সরকার প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। আগামী বছর থেকে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১০০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে তা চালু হবে। পরের বছর থেকে তা পর্যায়ক্রমে চালু হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিখনকালীন (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রমের সময়) সারা বছর ধরে মূল্যায়ন করা হবে। বছর শেষেও মূল্যায়ন হবে। তবে সেটাই সব নয়। সনদ দরকার আছে, কিন্তু সনদই সবকিছু নয়।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মূল্যায়নের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান পরীক্ষাব্যবস্থার বাস্তবতা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সারা বছর পড়ে বা না পড়ে পরীক্ষার ঠিক আগে রাত জেগে পড়াশোনা করা—শুধু শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয় না, পরীক্ষা দেয় তার পুরো পরিবার। আবার বছর শেষে পরীক্ষা দিয়ে ভালো কিংবা মন্দ, সেটা নিয়ে আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ রকমের… জিপিএ-৫ পেলে আনন্দের বন্যা, জিপিএ-৪ দশমিক ৮ পেলে কবরের নিস্তব্ধতা, সে রকম অনেক কিছুই দেখি। নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন সে রকম নয়। মূল্যায়ন হবে শিক্ষার্থীরা আসলে শিখছে কি না, তাদের কাজে লাগছে কি না, সেটাই করা।’
নতুন শিক্ষাক্রমের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কথা বলতে গিয়ে দীপু মনি বলেন, যোগ্যতাভিত্তিক শিখন নিশ্চিত করা, শিখনকালীন মূল্যায়নকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া, নম্বরভিত্তিক সনদের পরিবর্তে পারদর্শিতার রেকর্ডের ওপর গুরুত্বারোপ করা, মুখস্থনির্ভর জ্ঞানের পরিবর্তে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনে অনুপ্রাণিত করা ইত্যাদি।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমীন, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হেলাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) মো. মশিউজ্জামান।
Discussion about this post