শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ মঙ্গলবার মরমি কবি হাছন রাজার ১৬৮তম জন্মদিন। ১৮৫৪ সালের এই দিনে সুনামগঞ্জ শহরের কাছে সুরমা নদীর তীরে লক্ষ্মণশ্রী পরগনার তেঘরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। হাছন রাজা পরাক্রমশীল জমিদার ছিলেন। একসময় তিনি তার সম্পদ জনকল্যাণে দান করে দিয়ে কয়েকজন সঙ্গিনী নিয়ে হাওরে হাওরে ভাসতে থাকেন।
তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে আছে- ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে বলে বলে রে, ঘর-বাড়ি ভালা নাই আমার’, ‘আগুন লাগাইয়া দিল কনে? হাছন রাজার মনে’ ও ‘গুড্ডি উড়াইল মোরে, মৌলার হাতের ডুরি’।
হাছন রাজার বাবা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে হাছন জমিদারিতে অভিষিক্ত হন।প্রথম দিকে অত্যাচারী হলেও পরে সবকিছু উইল করেন মানুষের জন্য। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষ্মণশ্রী ও সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন হাছন রাজা। জমিদারি ছেড়ে সৃষ্টিকর্তার খোঁজে নেমে পড়েন। মধ্য পঞ্চাশে এসে তিনি ভিন্ন এক মানুষে পরিণত হন। একসময় তিনি বিশ্বাস স্থাপন করেন, নিজের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তার বাস।
সুনামগঞ্জ জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘হাছন রাজার অসাম্প্রদায়িক চেতনার গান কম গাওয়া হয়। ভাববাদ ও আধ্যাত্মিক গান বেশি চর্চা হয়। সবকিছুই গাইতে হবে, না হয় হাছন রাজাকে জানা হবে কম।’ হাছন রাজার প্রপৌত্র, হাছন রাজা মিউজিয়ামের পরিচালক সামারিন দেওয়ান বলেন, হাছন রাজাকে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমির আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তিনি হাছন রাজাকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সরকারি সহায়তা বাড়ানোর দাবি জানান।
জেলা কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী জানান, জানুয়ারিতে হাছন রাজাকে নিয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে উৎসব হবে। হাছন রাজার গান সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে শিল্পকলা কর্তৃপক্ষ।
Discussion about this post