নিজস্ব প্রতিবেদক
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা এবং উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে রাতভর আন্দোলনে ছিলেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে নানা স্লোগান দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রীর লোগো সম্বলিত গাড়ি বহরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিনিধি দল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) শফিউল আলম জুয়েল। শিক্ষার্থীদের তিন প্রতিনিধি তার মাধ্যমে ফোনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুঠোফোনে আমাদের সাথে প্রায় ৩০ মিনিট কথা বলেছেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট থেকে সকল জলকামান, রায়টকার, স্পেশাল ফোর্স, পুলিশ-র্যাবকে সরিয়ে ফেলবেন বলে আশ্বাস দেনে।পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি আমাদের সব কথা শুনেছেন। তার কাছে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়টি উল্লেখ করেছি এবং বর্তমান উপাচার্যের অধীনে আমরা আর একদিনও পড়াশোনা করতে চাই না — এ বিষয়টিও উল্লেখ করি। আমাদের তিনি উপাচার্যের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দেন।
শফিউল আলম জুয়েল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তিনি আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায় তিনি নেবেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ারও ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া শাবি শিক্ষার্থীদের সহিংসতার পথে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী রাত ১২টার পরে ক্যাম্পাসের গেইট থেকে জলকামান, ট্যাংকসহ পুলিশ বাহিনী সরিয়ে নেয়া হয়।অনেকটা চাপের মুখে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনাটি ‘দুঃখজনক’ বলে অানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে শাবিপ্রবি প্রশাসন। এতে আহতদের চিসিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছ বলে জানানো হয়।
অন্যদিকে আন্দোলন থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণ করে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে রাষ্ট্রপতি বরাবর খোলা চিঠি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে দশটায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভরত সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ চিঠি পাঠ করেছেন আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী। তারা এই চিঠি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনের সামনে ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ‘বিনা উস্কানিতে সুপরিকল্পিতভাবে’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশের হামলার অভিযোগ করা হয়।
Discussion about this post