অনলাইন ডেস্ক
শুরুটা হলো ২০০০ সালে। অনেকে যখন কম্বল বিতরণ করতেন, তখন তিনি উদ্যোগ নিলেন দুস্থদের মাঝে বিতরণ করবেন টেকশই উন্নত আরামদায়ক লেপ। এরপর কেটেছে ২১ বছরের বেশি সময়। গত ২২ বছর ধরে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে ব্যক্তি উদ্যোগে দুস্থ শীতার্তদের মাঝে লেপ বিতরণ করে চলছেন ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ।
উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে নিজ অর্থায়নে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার দুস্থ মানুষের মাঝে তুলে দিয়েছেন লেপ।
কাজী ওয়াহিদের লেপ বিতরণের কৌশলও ভিন্ন। অধিকাংশ সময়ই তার বাসায় মেহমান হিসেবে আমন্ত্রণ করা হয় দুস্থদের। প্রথমে আগতদের দেওয়া হয় সুস্বাধু ভালো মানের খাবার। এরপর হাতে হাতে তুলে দেওয়া হয় লেপ। হাসিমুখে বিদায় নেয় দুস্থ পরিবারগুলো। আবার কখনো বাড়ি বাড়ি গিয়েই লেপ পৌঁছে দেন তিনি।
লেপ বিতরণ ছাড়াও বিভিন্ন ভালো কাজে বরাবর এগিয়ে থাকেন ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ। প্রতি মাসে নিজ বাড়িতে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তিনি। গুরুতর রোগীকে ঢাকায় নিয়ে অপারেশনের ব্যবস্থাও করে থাকেন তিনি।
স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা দেওয়াসহ নিজস্ব অর্থায়নেই কক্সবাজার ঘুরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করেন তিনি। এছাড়া বাবা আর শিক্ষকের নামে প্রতিবছর বৃত্তি বিতরণ করেন চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে।
আর পঞ্চম, দশম ও উচ্চ মাধ্যমিকের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের বসা ও নাস্তার ব্যবস্থা করেন কাজী ওয়াহিদ।
ইঞ্জিনিয়ার কাজী আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, কম দামের কম্বলগুলো বেশিদিন ব্যবহার করা যায় না, তাই আমি চিন্তা করেছিলাম একটি লেপ বিতরণ করা গেলে তারা অনেক দিন ব্যবহার করতে পারবেন। সেইসঙ্গে শীতে বেশি উষ্ণতা পাবেন। তাই ২০০০ সাল থেকে শীতার্ত মানুষকে শীতে লেপ প্রদান করে আসছি।
প্রতিবছর ১ হাজার থেকে ১২শ আবার কোনো বছর ১৬শ পরিবারের মাঝেও লেপ বিতরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার পরিবারের হাতে লেপ বিতরণ করেছি। যারা লেপ নিতে আসে তার দুস্থ মানুষ। তাই তাদের একবেলা তৃপ্তি সহকারে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।
তিনি আরো বলেন, সামাজিক কাজ করতে পরিবারের সদস্যদের থেকে উৎসাহ ও সহযোগিতা দুটিই পাই। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো এবং সৃষ্টিকর্তা তৌফিক দেবেন ততোদিন লেপ বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি, চক্ষু চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে চাই।
Discussion about this post