শিক্ষার আলো ডেস্ক
এক ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার পর বিভাগীয় পদ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সহকারী অধ্যাপক পদের এক শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ এম আনিসুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার একদিনের মাথায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাকে বিভাগের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, “ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ২৫ (৩) ধারা মোতাবেক অনুযায়ী কৃষি বিভাগের বর্তমান সভাপতি এইচ এম আনিসুজ্জামানের স্থলে বিভাগটির ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাহার আলীকে সভাপতির অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলো।”
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. মোজাহার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, পত্রপত্রিকায় খবর আসা এবং শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এইচ এম আনিসুজ্জামানকে সভাপতির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্তের পরে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তাকে পুনরায় সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এর আগে রবিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বরাবর এই আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে প্রকাশিত যৌন হয়রানি, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন। একইসাথে আনীত অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে তাকে একাডেমিক সকল কার্যাবলি থেকে অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানান।
এর আগে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর ফোনালাপ ভাইরাল হয়। এরপরই ফোনালাপকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস সহ একাধিক অভিযোগ উঠে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু আমাদের এই শিক্ষকের ক্ষেত্রে বিষয়টি ব্যাতিক্রম। তিনি বিভিন্ন সময় জোরপূর্বক একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করে থাকেন। অনেকের পরীক্ষার উত্তর পত্রে নাম্বার বাড়াকমাও তার ইচ্ছামত হয়ে থাকে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, “আনিসুজ্জামান কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষার নম্বরপত্রে গড়মিল করা, উত্তরপত্রে ইচ্ছামাফিক নম্বর বসানো, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকিসহ হিসাব-নিকাশে অসমতার ঘটনা তৈরি করেছেন।”
“সর্বশেষ বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির বিষয় উঠে এসেছে। ফলে বিতর্কিত শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধানের অধীনে শিক্ষার্থীরা সকল প্রকার শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মনস্থির করেছে।”
Discussion about this post