অনলাইন ডেস্ক
আজ (সোমবার) অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।
রোববার রাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম জানান, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে বিচারক এ মামলার রায় ঘোষণা করতে পারেন। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় আদালত বন্ধ থাকার পরও মামলাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে চার্জশিটভুক্ত ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিশাল তালিকার এ সাক্ষ্য-জেরা চ্যালেঞ্জিং হলেও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দ্রুততার সঙ্গে মামলাটি শেষ করতে চেষ্টা করেছি। এখন আশা করছি, রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করছেন। তাদের অন্যতম আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত বলেন, ‘আমরাও চাই সিনহা হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার হোক। যারা প্রকৃত দোষী তাদের শাস্তি হোক। তবে কোনো নির্দোষ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পান।’
মামলার রায়ে প্রত্যাশা সম্পর্কে সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বলেন, ‘আমার ভাইকে যারা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের সবাইকে যেন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়। এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড যেন আর না ঘটে। অপরাধ করে কেউ যেন পার না পায়। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়— এটাই রায়ে প্রমাণ হোক।’
গত ১২ জানুয়ারি আলোচিত এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ। ওইদিনই বিচারক রায়ের জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে এপিবিএন চেকপোস্টের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা দায়ের করে। একই বছরের ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন ফেরদৌস।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই সঙ্গে পুলিশের দায়ের করা তিনটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে মামলা থেকে সিনহার সহযোগী সাইদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথকে অব্যাহতি দেন।
২০২১ সালের ২৪ জুন পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত ওই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ২৭ জুন আদালত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন। সেই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৬ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত দিন ধার্য করেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আদালতের বিচার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানিতে বিলম্ব হয়।
মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
Discussion about this post