শিক্ষার আলো ডেস্ক
উচ্চমাধ্যমিকে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পান অনেকে। তবে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ভর্তি হতে না পেরে ৮৩ জন হাইকোর্টে রিট করেন।দীর্ঘ আড়াই বছর আইনি লড়াই শেষে ওই ৮৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ জন পেয়েছেন ভর্তির অনুমোদন।
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি জমা দিয়ে ভর্তির অনুমতি পেয়েছেন ফাহিমা আক্তার ও জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন। এর মধ্যে ফাহিমা আক্তার মেধাতালিকায় ছিলেন বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত এ-ইউনিটে ৪৩৪তম। এ ছাড়া জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত বি-ইউনিটে ১০৯১ তম ।
আজ রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ভর্তির অনুমোদন দেয়। এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে তাদেরকে ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করতে চবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ বিষয়ে জিনাতুল ফেরদৌস নাহিন গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘ ২৫ মাস পর আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমোদন পেয়েছি। আমরা কল্পনা করিনি ভর্তি হতে পারবো। আমরা ভর্তির অনুমোদন পেয়ে সত্যি আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির অনুমোদন দিয়েছি। তাদের ভর্তি হতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
তথ্য মতে, ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়া চবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় (‘এ’ ‘বি’ এবং ‘সি’ ইউনিটে) মেধাতালিকায় স্থান পাওয়ার পরও ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে ৮২ জন শিক্ষার্থী তিনটি রিট করেন। এছাড়া ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া একজন শিক্ষার্থী একটি রিট করেন। এসব রিটের শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ চবির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তিন ইউনিটে মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া ৮২ শিক্ষার্থীর ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়।
এছাড়া ‘ডি’ ইউনিটে মানোন্নয়ন দেয়া ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ না করায় রিট আবেদনকারীর ফলাফল প্রকাশ ও সেই অনুযায়ী ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু আবেদনগুলো দীর্ঘদিন শুনানিতে না আসায় শিক্ষার্থীরা গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ভার্চ্যুয়ালি বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে এনে বলেন, আমরা কোথাও ভর্তি হইনি। চবিও আমাদের ভর্তি করেনি। আমাদের শিক্ষাজীবন আটকে আছে।
এরপর আদালত শুনানির জন্য দিন ধার্য করে। একই বছর ২২ সেপ্টেম্বর শুনানিতে ৮২ শিক্ষার্থী নয়, কেবল যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।তবে এতদিন রায়ের কপি আনতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তির অনুমতি দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব উদ্দিনের সহযোগিতায় রায়ের কপি সংগ্রহ করে জমা দেয়ার পর কর্তৃপক্ষ এ সপ্তাহের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্নের আশ্বাস দেয়।
অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির অনুমোদন দিয়েছি। নিয়মানুযায়ী তারা ২০১৯-২০ সেশনেই ভর্তি হবেন। তবে যেহেতু ওই সেশনের পরীক্ষাগুলো হয়ে গেছে, তাই তারা পরবর্তী সেশনের সঙ্গে পরীক্ষা দেবেন।
Discussion about this post