অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের সবচেয়ে দামি চায়ের নাম ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গল’। যার প্রতিটি পাতায় আছে সোনার পরত। বিশ্বের সবচেয়ে দামি চা ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গলে’র দাম কেজি প্রতি ১৬ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মে মাসে এই চায়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে ঐতিহাসিক লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে।
জানা গেছে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাকি জাপানি চায়ের ভক্ত ছিলেন। আর বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামি চায়ের নামকরণের অনুপ্রেরণাও তিনি। দ্য গোল্ডেন বেঙ্গল। সোনার বাংলা। দাম প্রতি কেজিতে ১৪ লাখ পাউন্ড। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ কোটি টাকা।
বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রিমিয়াম চায়ের প্রতিষ্ঠান ১০৩ ব্রিক লেন, লন্ডনে অবস্থিত লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের স্বত্বাধিকারী অলিউর রহমান এই চায়ের নামকরণের ক্ষেত্রে বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতকে। সেখান থেকেই গোল্ডেন বেঙ্গল বা সোনার বাংলা নামটি বাছাই করা হয়েছে।
নতুন বছরেই আত্মপ্রকাশ ঘটতে চলেছে ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গলে’র। সৌজন্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রিমিয়াম চায়ের প্রতিষ্ঠান- লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ। লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের কর্ণধার আলিউর রহমান বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, আমার সোনার বাংলা, তার নাম অনুযায়ী এর নামকরণ।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি চা ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গল’ এসেছে বাংলাদেশের সিলেট জেলা থেকে। প্রকারে ব্ল্যাক টি, কিন্তু স্বচ্ছ পেয়ালায় তার সোনালি উপস্থিতি। ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গল’ চা প্রস্তুতের প্রক্রিয়াটিও বেশ সময়সাপেক্ষ। এর জন্য সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর। ৯০০ কেজি উৎপাদিত চা থেকে মাত্র এক কেজি চা পাতা বাছাই করা হয়।
যার প্রতি পাতায় ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপ। আলিউর রহমান আরও বলেছেন, এই চা প্রস্তুত করতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর। নোবেল প্রাইজ উইনার্সদের এই চা পাতা উপহার দিতে পারবো বলে মনে করছি। বিশ্বের সবচেয়ে দামি চা, ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গলে’র ঠিকানা লন্ডনের ১০৩ ব্রিক লেনে অবস্থিত লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ। লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ। যার প্রতিটি কোণায় ৩০০ বছরের পুরনো ইতিহাসের ছোঁয়া।
একসময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে সারা বিশ্ব থেকে আসা সেরা চায়ের পাতার নিলাম হত এখানে। ৯-এর দশকে এই প্রতিষ্ঠান কিনে নেন চা গবেষক আলিউর রহমান। পরবর্তীতে তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ। বিশ্বের ৪২ দেশের প্রায় ৯০০ ধরনের প্রিমিয়াম চা পাতা পাওয়া যায় এখানে। এর মধ্যে ৩০০ ধরনের চা সাধারণ মানুষের জন্য।
বিশ্বের ৭৮টি রাজপরিবারকে চা পাতা সরবরাহ করে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ। এমনকি, ইংল্যান্ডের রানির পছন্দের চা-ও এখান থেকেই পৌঁছে যায় বাকিংহাম প্যালেসে। ঐতিহাসিক সেই প্রতিষ্ঠানই বিশ্বের সবচেয়ে দামি চা ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গলে’র সম্ভার নিয়ে হাজির। ঐতিহাসিকভাবে বিশ্বের সেরা চায়ের ঠিকানা লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ, চা শ্রমিকদের প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, সেই সমস্ত চা শ্রমিকদের আৰ্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য নানা পরিকল্পনার কথা।
আলিউর রহমানের কথায়, যারা এই চা বাগানগুলোতে কাজ করেন, ঐতিহাসিকভাবে তাদের কাজের পরিবেশই হোক বা জীবনযাত্রা, কোনোটাই অনুকূল নয়। এটা আমরা বদলাতে পারি, পরের বছর আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চলেছি, যারা টি এস্টেটগুলোতে পরিশ্রম করেন, সেই চা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক তিন গুণ করবো, একটি চায়ের প্যাকেট আপনি সুপার মার্কেট থেকে কেনেন, তাতে দুই থেকে তিন পেন্স প্রতি প্যাকেটে যুক্ত করলেই এইটা সম্ভব হবে, তবে আমাদের সাপোর্ট দরকার, সরকার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। আপাতত অপেক্ষা ২০২২ সালের মে পর্যন্ত। কেননা সেই মাসেই আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটবে বিশ্বের সবচেয়ে দামি চা ‘দ্য গোল্ডেন বেঙ্গলে’র।
এছাড়া শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের ফেসবুক পেইজেও একটি ভিডিও পোস্ট করে লেখা হয়, “গতকাল আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে চা পরিবেশন করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দামি চা ‘গোল্ডেন বেঙ্গল টি’র স্বাদ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। চমৎকার এই চা ২০২২ সালের মে মাসে বিক্রি করা শুরু হবে এই ঘোষণা দিতে পেরে আমরা খুবই উত্তেজিত”।
Discussion about this post