অনলাইন ডেস্ক
অমর একুশে গ্রন্থমেলা মানে বিভিন্ন বয়সের পাঠক, প্রকাশক, লেখকদের মাঝে আনন্দের ছড়াছড়ি। বই কেনার, উপহার পাওয়ার, উপহার দেওয়ার আনন্দ। ঘোরাঘুরি আড্ডা ও গল্প-গুজবের আনন্দ। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যে আনন্দ বেশি মুগ্ধতা ছড়ায়, অনুভূতিতে শিহরণ জাগায়, সবার মাঝে অপার্থিব সুখ ছড়িয়ে দেয়—সেটা হলো শিশুদের কোলাহলপূর্ণ উপস্থিতি।
আর এ আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে মূল আকর্ষণ বইমেলান ‘শিশু প্রহর’। গতবছর করোনার কারণে ছিল না এ আয়োজন। এবারও মেলার প্রথম সপ্তাহে ছিল না এটি। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মেলার একাদশতম দিনে দ্বিতীয় শুক্রবার ফের শুরু হলো ‘শিশু প্রহর’। সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হয় পর্বটি। এ সময় বিভিন্ন বয়সের শিশুদের রঙিন সাজ আর কোলাহলে ঝলমল করছিল মেলার শিশু চত্বর।
শিশুতোষ ধারাহিক নাটক ‘১২৩ সিসিমপুরের’ মূল চরিত্র টুকটুকি, হালুম, শিকু আর ইকরি শিশু প্রহরের মূল আকর্ষণ। এদের উপস্থিতি শিশুদের প্রাণে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দধারা, মেতে ওঠে উল্লাসে। মহাখালী থেকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঘুরতে এসেছে আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন। সে বলে, ‘কালকে জেনেছি আজ সকালে শিশু প্রহর হবে। আর তাই ভাইয়ার কাছে আবদার করলাম মেলায় নিয়ে আসার জন্য। মেলায় এসে অনেক মজা করেছি, বই কিনেছি। টুকটুকি, হালুম, ইকরি, শিকুদের সঙ্গে ছবি তুলেছি।’
তেজগাঁও নাখাল পাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগার থেকে দলবেঁধে বইমেলা ঘুরতে এসেছে শিশুদের একটি দল। দলবেঁধে তারা শিশু চত্বরের এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরে ঘুরে বই কিনছে। সেখানে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা হয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী লোকমানের। সে বলে, ‘আজকে ছুটির দিন ছোটদের সঙ্গে নিয়ে এসেছি। আজকে শিশু প্রহরে ওরা বেশ মজা করেছে। নিজের পছন্দের গল্প, কবিতার বই কিনেছে। সব মিলিয়ে খুব ভালোই লাগছে।’
ছুটির দিনে দুই সন্তানকে নিয়ে মিরপুর থেকে মেলায় এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আসলে মেলাটা সব বয়সের মানুষের, সবাই আসেন, সবার পছন্দ মতো বই কেনে। ১৯৯৮ সালে বাংলা একাডেমির ‘শিশু প্রহর’ চালু করার পর থেকে ছুটির দিন সকালটা শিশুদের। যদিও গত বছর করোনার কারণে ছিল না, এবারও প্রথম সপ্তাহে ছিল না। আজ থেকে শুরু হয়েছে। বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। তাদের আনন্দ দেখে নিজের শিশুকালের স্মৃতি মনে পড়ে ভালো লাগে ।’
সিসিমপুর স্টল ইনচার্জ নূর মো. আল রাজি বলেন, ‘আসলে শিশুদের জন্য আমরা প্রতিবছর এ আয়োজন করে থাকি। গতবার করোনার কারণে করতে পারিনি। শঙ্কা কাটিয়ে এবার করতে পেরেছি। খুব ভালো লাগছে। ছোট ছোট শিশুদের নির্মল হাসি দেখে মনে হয়, যেন স্বর্গের ফুল ফুটেছে।’
Discussion about this post