কড়াকড়ি নিয়ম আরোপ করে সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে আদেশ জারি করেছে সরকার। সরকারের এই আদেশে সন্ধ্যা ৬টার পর ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। আর এই নির্দেশ অমান্য করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এরআগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন সাধারণ ছুটি আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত হবে। এরপরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ জন। গত ৮ মার্চ থেকে সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৪ জন এবং মোট মৃত্যু ২৭ জন।
করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল এবং পরে ৫-৯ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। পরে ১৪ এপ্রিল এবং সর্বমেষ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়লো।
তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সবশেষ সাধারণ ছুটির আদেশে জনসমাগমের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আগের ছুটির ধারাবাহিকতায় ১৫ ও ১৬ এপ্রিল এবং ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো। সাধারণ ছুটির সময় আগামী ১৭-১৮ এপ্রিল এবং ২৪-২৫ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি সংযুক্ত থাকবে।
বর্ণিত ছুটি অন্য সাধারণ ছুটির মতো বিবেচিত হবে না জানিয়ে আদেশে এই ছুটির সময় যেসব নির্দেশাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে তাও বলে দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে।
অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে সবাইকে অনুরোধ করা হলো।
সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এ নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হলো।
বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সব কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।
আদেশে বলা হয়েছে, জরুরি পরিষেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না।
‘কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্পপণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।’
জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখা যাবে জানিয়ে ছুটির আদেশে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা চালু রাখতে পারবে বলে আদেশ বলা হয়েছে।
‘মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
সাধারণ ছুটির মধ্যে গণপরিবহন ও দোকানপাট এবং মার্কেটগুলো বন্ধ রয়েছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণের পর গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছুটি রয়েছে। এই ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলেও তা ঈদের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন।
Discussion about this post