শিক্ষার আলো ডেস্ক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে ‘আর্থিক লেনদেন’ নিয়ে ফোনালাপের অডিও প্রকাশ হওয়ার পর অভিযোগের মুখে থাকা দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বুধবার জানান, শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে তদন্ত করতে উপাচার্যের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন ও হিসাব নিয়ামক শাখার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আহমদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ মার্চ) তাদেরকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান।
এর আগে, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও ফোনালাপ ফাঁস হয়।
বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তদন্ত কমিটি গঠন ও নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডে উপাচার্যের একান্ত সহকারী রবিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হলে তোমার কথা বলব। ম্যাডাম যেভাবে বলে সেভাবে হবে। চট্টগ্রামে দেখে তোমাকে টান দিলাম। তোমার ভাবির (মিছবাহু রবিনের স্ত্রী) জন্যও চেষ্টা করেছি, এটা (টাকা) দিতে পারিনি বলে হয়নি। আমার স্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে। বর্তমানে সে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আছে। বাস্তবতা যেটা সেটা আমি তোমাকে ইঙ্গিত করলাম।’
অপর একটি ফাঁস হওয়া রেকর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার বৃত্তি বিভাগের কর্মচারী আহমেদ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি লবিং করছেন নাকি? বর্তমান পরিস্থিতি লেনেদেন ছাড়া কোনোকিছু হচ্ছে না। আমি আপনাকে ভিসি ম্যাডামের সঙ্গে বসিয়ে দেব।’
নিয়োগ প্রার্থী টাকার পরিমাণ জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, ‘১৬ ধরা হয়েছে। এখানে এখন তৃতীয় শ্রেণিতে চাকরি পেতে ১২ লাখ এবং চতুর্থ শ্রেণির ঝাড়ুদার ও মালির চাকরি পেতেও ৮ লাখ নেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও ফোনালাপ ফাঁস হয়। এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি হাটহাজারী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি ও পিএস খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীনকে অপসারণ করে পূর্বের কর্মস্থলে ফেরত পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ৫ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় এই নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ বাতিল ও জড়িতদের শনাক্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
Discussion about this post