বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে করোনাভাইরাসের ঝড়ো হাওয়ার কারণে লোকসমাবেশ ও সব ধরনের সভা, মিটিং ও মিছিল বন্ধ রয়েছে। রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে লকডাউন। এবার ছায়ানট রমনার বটমূলের নিয়মিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের পরিবর্তে সীমিত আকারে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠান বিটিভির মাধ্যমে সম্প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানাগেছে । ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বিশ্বমানব আজ বিপর্যস্ত। বিনাযুদ্ধ আত্মসমর্পন করে না মানবজাতি। লড়াই চলছে, পাশাপাশি চলছে বিপন্ন মানবসমাজকে জাগিয়ে রাখার, বাঁচিয়ে রাখার অনন্ত প্রয়াস।
এই জীবনযুদ্ধে মনোবল অটুট রাখা অনিবার্য। তাই নতুন বঙ্গাব্দকে স্বাগত জানানো এখন আর উৎসব নয় বরং জীবনযুদ্ধ জয়ের শপথ। তাই পিছু না হটে নববর্ষবরণে ছায়ানট আয়োজন করেছে উজ্জীবনী সুরবাণীর।
এতে আরো জানানো হয়, করোন ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বাতিল হয়েছে পহেলা বৈশাখের সব আয়োজন। তবে ডিজিটালি বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সীমিত আকারে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক এই সংগঠন।
‘উৎসব নয়, সময় এখন দুর্যোগ প্রতিরোধের’- এ প্রতিপাদ্যে সীমিত আকারে বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নবসজ্জার অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে পহেলা বৈশাখ ভোর সাতটা থেকে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের কাছ থেকে সকল বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠানের ফ্রেশ ফিড পাবে।
এদিকে অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে সাম্প্রতিক নানা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের নির্বাচিত গান এবং বর্তমান সংকটের প্রেক্ষাপটে ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুনের সমাপনী কথন দিয়ে, যা বিটিভি ছাড়াও ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও সম্প্রচারিত হবে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান আমলের বৈরী পরিবেশে বাঙালির আপন সত্তার স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা আর মানবকল্যাণের ব্রত নিয়ে ১৯৬১ সালে ছায়ানটের জন্ম। এই সংগঠন আজন্মই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ। লক্ষ্য অর্জনে ১৯৬৭ সাল থেকে প্রতিবছর রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের ভোরে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে আসছে এই সংগঠন।
১৯৭১ সালে দেশকে শত্রুমুক্ত করার সশস্ত্র সংগ্রামের সময় ছায়ানটের আয়োজন আর কখনো বন্ধ হয়নি রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন। কিন্তু রেকর্ড হলো এবার।
Discussion about this post