শিক্ষার আলো ডেস্ক
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস না পড়ানো হয়— তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় থাকে না পলিটেকনিক হয়ে যায়। মঙ্গলবার (১০ মে) ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব বিষয় এবং বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা দিতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পদে পদে বাধার মুখে পড়তে হয়। এইচএসসি পাসের পর শিক্ষর্থীদের যদি মাঝখানে একটা বছর বাদ যায়, বা সে অন্য কিছু পড়ে আসতে চায়, সেখানে সুযোগ দেওয়া হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব বয়সের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানোর ব্যবস্থা থাকা উচিত। বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত নয়।’
দীপু মনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমি আহ্বান জানাবো, শিক্ষার্থীদের পথ যেন বন্ধ করে না দেই। বিশ্ববিদ্যালয় হবে উদার। আর পদে পদে যেন প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করি। বিদেশে সব বয়সী শিক্ষার্থীর একসঙ্গে লেখাপড়ার সুযোগ রয়েছে।’ স্নাতকদের কর্ম উপযোগী করে গড়ে তুলতে ‘সফট স্কিলস’ শেখাতে হবে বলে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
বিশ্বের অগ্রসর দেশগুলো কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়। অথচ আমরা ধারণা করেই নেই, কম মেধাবী ও অস্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য কারিগরি শিক্ষা— এটা ঠিক নয়। তারা ডিপ্লোমা করে ভালো রেজাল্ট করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারে, তারা তাদের যোগ্যতা দিয়ে ভর্তি হবে। শুধুমাত্র ডুয়েট ছাড়া কোনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায় না তারা।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরও বলেছেন, শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির আগে শিক্ষার মান অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করা অনেক বেশি জরুরি। প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ই ধারণক্ষমতা বিবেচনায় না নিয়ে শিক্ষার্থী বাড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামছে। এর প্রত্যক্ষ কুফল আমরা দেখতে পারছি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার জায়গা নেই, খেলাধুলার জায়গা নেই, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্যও আলাদা জায়গা নেই। এছাড়া আরও অনেক সমস্যা তো রয়েছেই। তাই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমার আহবান থাকবে; আপনারা শিক্ষার্থী ভর্তির অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামবেন না।
সমাবর্তনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপার্চায এমিরেটাস অধ্যাপক এম এ সাত্তার মণ্ডল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) রুটিন দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম, ইস্ট ওয়েস্ট ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এম শহিদুল হাসান।
Discussion about this post