প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হলে অমানুষে পরিণত হয়। একটা মা জ্বরে আক্রান্ত হলে তার সন্তানরা-স্বামী গিয়ে জঙ্গলে রেখে আসে। এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশে এরকম আচরণ কেন ঘটবে? করনো সন্দেহ হলে পরীক্ষা করান, চিকিৎসা করান, যত্ন নিন। জীবন আল্লাহর হাতে। যে কেউ যে কোনও সময় মারা যেতে পারে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কারও অমানবিক হওয়া আচরণের যৌক্তিকতা নেই। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে মানুষকে ঘর থেকে বের করে দেবে, আক্রান্ত ডাক্তারকে এলাকাছাড়া করবে, এরকম হতে পারে না।’
ঢাকা বিভাগের ৯টি জেলার জনপ্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেশের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এই কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে এই কনফারেন্স শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস এমন এক আতঙ্ক যা সারাবিশ্বে দেখা যায়নি। কিন্তু এই ভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব যেন একটা বিন্দুতে চলে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দা হতে পারে সন্দেহে আমরা ৯২ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। তিন অর্থবছর ধরে এটা কার্যকর হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জীবন চালানোর জন্য কাজ করতে হবে, বসে থাকলে চলবে না। তবে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিয়ে কাজ করবেন। ‘
তিনি বলেন, ‘কৃষি উৎপাদনের দিকে মনোযোগ দিন। কৃষিকাজ খোলা মাঠে হয়। করোনার ঝুঁকি কম। যারা দিনমজুর তারা যান চলাচল শুরু হলে গ্রামে যাবেন, ধান কাটবেন। ফসল উৎপাদনের দিতে মনোযোগ দিতে হবে। তবে জনসমাগম যাতে না হয়। খোলা মাঠে বড় যায়গায় যাতে হাট বসে। মাস্ক পরে যাবেন, বেচাকেনা করে চলে আসবেন। গরম পানি খাবেন, মৌসুমী ফলগুলো খাবেন।’
রমজানে পণ্য পরিবহন ও দাম স্বাভাবিক রাখা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা মেনে ঘরে বসে নিজের মতো করে ইবাদত করুন। রমজানে ঘরেই তারাবি পড়ুন। নিজের মতো করে ইবাদত করুন।’
ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম সহ্য করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। তদন্তে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এরকম কিছু ঘটেনি। কাজেই দুর্যোগের সময় কেউ কারও পেছনে লেগে থাকবে এটা ঠিক না। দুর্নীতি বা অনিয়ম হলে আমরা বরদাশত করবো না।‘
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ-সাহায্য যেন সঠিক মানুষের হাতে পৌঁছায়। তিনি সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
Discussion about this post