বাংলাদেশ ব্যাংক করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে সরকারি ছুটির মধ্যে সীমিত আকারে ব্যাংক–সেবা চালু আছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছে, ব্যাংকিং লেনদেন চালু রাখতে হবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। প্রতিটি জেলা শহরে কমপক্ষে একটি করে শাখা ও পোশাকশিল্প এলাকার সব শাখা খোলা রাখতে হবে। লকডাউন এলাকারও একটি শাখা খোলা রাখতে হবে। পাশাপাশি এসব শাখায় এখন ঋণ মঞ্জুরি ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চালু থাকবে।
এর ফলে ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি শাখা খোলা রাখতে হবে এবং কর্মকর্তাদের আরও বেশি সময় সেবায় নিয়োজিত রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা জারি করেছে, যা আগামী রোববার থেকে কার্যকর হবে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লেনদেন চালু ছিল। ছিল না ঋণ–সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম। আর বেসরকারি ব্যাংক বেশি শাখা খোলাও রাখেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক তার নির্দেশনায় বলেছে, অনলাইন–সুবিধা আছে, এমন ব্যাংকের শাখা দূরত্ব বিবেচনা করে খোলা রাখতে হবে। প্রতিটি জেলা সদর অথবা জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত শাখার একটি খোলা রাখতে হবে। মহানগর ও বিভাগীয় শহরে সব এবং গুরুত্বপূর্ণ জরুরি বৈদেশিক লেনদেনের জন্য নির্ধারিত শাখা রাখতে হবে। এ ছাড়া পোশাকশিল্প এলাকায় অবস্থিত সব ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখতে হবে।
পাশাপাশি সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া যেসব জেলা–উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, ওই এলাকায় কমপক্ষে প্রতিটি ব্যাংকের একটি শাখা খোলা রাখতে হবে। সেখানে ব্যাংক কর্মকর্তাদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
খোলা থাকা শাখায় কী কী সেবা প্রদান করা যাবে, তা–ও সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে চেকের মাধ্যমে অথবা নগদ অর্থ জমা, অর্থ উত্তোলন, পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রদান, ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকার জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তির অর্থ পরিশোধ, প্রতি মাসের অর্থ উত্তোলন চালু থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় এমন সব সুবিধাও চালু রাখতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
ব্যাংক খোলা রাখার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রণীত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা–সংক্রান্ত নীতিমালা পালন করতে হবে। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধার জন্য বুথে পর্যাপ্ত অর্থ রাখতে বলা হয়েছে। এর আগে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে সব শাখা খোলা রাখার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, তা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের ঝুঁকি বিবেচনায় ইতিমধ্যে বিশেষ ভাতা চালু হয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হলে এবং মারা গেলে বিশেষ স্বাস্থ্যবিমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
Discussion about this post