অনলাইন ডেস্ক
জীবনের প্রথম ‘সুপার হিরো’ হিসেবে বেশিরভাগ মানুষই নিজের বাবার কথা উল্লেখ করেন। বাবা-র কথা বলতে গিয়ে অনেকেই বলেন, বাবা হলেন সেই বটবৃক্ষ, যা রোদ, বৃষ্টি কিংবা ঝড়ে সন্তানকে আগলে রাখে পরম মমতায়। বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য আলাদা কোনও দিন প্রয়োজন হয় না। তবে বিশেষ একটি দিনে যদি খানিকটা সময় আলাদা করে বাবাকে দেওয়া যায়, তবে ক্ষতি কী?
আজ বিশ্ব বাবা দিবস। প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বজুড়ে পালিত হয় দিবসটি। আমেরিকার পশ্চিম ভার্জেনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই এই দিনটি প্রথমবারের মতো পালিত হয়। অবশ্য সনোরা স্মার্ট ডড নামের ওয়াশিংটনের এক নারীর মাথাতেও বাবা দিবসের আইডিয়া আসে। সেটা ১৯০৯ সালের কথা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ভার্জিনিয়ার বাবা দিবসের কথা তিনি জানতেনই না!
বাবা দিবসের ইতিহাস
সনোরা ছিলেন ৬ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মা ইলেন স্মার্ট যখন মারা যান, তখন সোনোরার বয়স ছিল মাত্র ষোলো বছর। মা মারা যাওয়ার পর বাবা উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন সন্তানদের মানুষ করার দায়িত্ব। পেশায় কৃষক উইলিয়াম শত ব্যস্ততার মধ্যেও তাদের মায়ের অভাব এতটুকু বুঝতে দেননি।
একবার মা দিবসের অনুষ্ঠানে চার্চে যান সনোরা। তখনই তার মাথায় এ চিন্তাটা আসে। মায়েদের সম্মান জানানোর জন্য একটি দিন যদি থাকতে পারে, বাবাদের জন্য কেন নয়? তারপর বিশেষ একটি দিনে বাবার প্রতি সম্মান জানানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জনমত গড়ে তোলেন তিনি।
এরপর নানা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯১০ সালের ১৯ জুন, অর্থাৎ জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বড় পরিসরে প্রথম বাবা দিবস পালিত হয়। প্রথম আনুষ্ঠানিক বাবা দিবসে শহরের তরুণ-তরুণীরা দুটি করে গোলাপ নিয়ে যান চার্চে। একটি লাল, অন্যটি সাদা। লাল গোলাপ জীবিত পিতার শুভেচ্ছার জন্য, আর সাদা গোলাপ মৃত পিতার আত্মার তুষ্টির জন্য। বিষয়টি পুরো মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা প্রশংসিত হয় ব্যাপকভাবে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন রাষ্ট্রে শুরু হয় বাবা দিবস উদযাপন।
১৯১৯ সালে পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘বাবা দিবস’ পালন করা হয়। কিন্তু তারপরেও এটাকে জাতীয়ভাবে পালনে কংগ্রেসের নানা দ্বিধা ছিল। অবশেষে ১৯৬৬ সালে ৫৬ বছর পর বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেওয়া হয়।
Discussion about this post