নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশব্যাপী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে সম্মিলিতভাবে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘সিলেটে বন্যায় যে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে সেখান থেকে আমরা অচিরেই মুক্তি পাব। আবার সাধারণ জীবনে ফিরে আসবেন বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষগুলো।’
বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও কলেজে কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (সিইডিপি) আওতায় ‘রিজিওনাল ওয়ার্কশপ অন ইনস্টিটিউশনাল ডেভেলপমেন্ট গ্রান্ট (আইডিজি) কলেজেস: প্রোগ্রেস অ্যাচিভমেন্ট অ্যান্ড রি-অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ওয়ার্কশপে অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘সারাদেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা যদি বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ায়, ত্রাণ বিতরণসহ সার্বিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো এক ধরনের ভরসা পাবেন, আস্থা পাবেন যে- এদেশের তরুণ প্রজন্ম তাদের সঙ্গে থাকছে। শিক্ষকদের মতো সচেতন জনগোষ্ঠী তাদের পাশে থাকছে। যতোদিন প্রয়োজন আমরা এটাতে সম্পৃক্ত থাকতে চাই। দীর্ঘ মেয়াদে যদি এই কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে হয়, নিঃসন্দেহে শিক্ষা পরিবারের অংশ হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই ধরনের মহৎ কাজে সম্পৃক্ত হব। ইতোমধ্যে ত্রাণ বিতরণ কাজে যারা সম্পৃক্ত আছেন তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে জাতীয় দায়িত্বের অংশ হিসেবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই কার্যক্রমে অংশ নিতে চাই।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষায় একটা প্যারাডাইম শিপ্ট হচ্ছে, পরিবর্তন হচ্ছে। আগে যে ধরনের শিখন এবং শেখানোর পদ্ধতি ছিল সেটা পুরোটা পাল্টে যাচ্ছে। কনটেন্টে বিশাল পরিবর্তন আসছে। নতুন নতুন প্যাডাগোজি শুরু হচ্ছে। মাধ্যমও বদলে যাচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তার অনেকগুলোতে আমি নিজেও যুক্ত ছিলাম, সেখানে মনে হয়েছে এটি খুবই কার্যকর। আসলে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। এটি দীর্ঘমেয়াদী একটি প্রক্রিয়া। নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষকদের সব পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার সিংহভাগ শিক্ষার্থী এই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে অধ্যয়ন করছে। আমরা যদি নতুন নতুন অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে এই অংশের মান উন্নয়ন করতে পারি, তাহলে এর প্রভাব পড়বে আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর। সেজন্যই কলেজ শিক্ষার এই অংশের যত দ্রুত সম্ভব উন্নয়ন ঘটাতে হবে। যাতে শিগগির আমরা কাক্সিক্ষত জায়গায় পৌঁছতে পারি। ইতোমধ্যে সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন পিজিডি কোর্স চালু হচ্ছে। অনেক সময় নিয়ে ব্রেইন স্ট্রর্মিং করে এই কোর্সগুলো চালু করা হচ্ছে। এটার সুফল আমরা নিশ্চয়ই পাব।’ ওয়ার্কশপে শিক্ষকরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে গ্রুপ প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে শিক্ষকরা উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের কাঙ্খিত মানের পাঠদানে কলেজগুলোর বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন। এসব বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং উপাচার্য শিক্ষকদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
সিইডিপির প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি) মোহাম্মদ খালেদ রহিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন-তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. হারুন-অর-রশিদ। উপাচার্য সিইডিপির ওয়ার্কশপের পাশাপাশি তেজগাঁও কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে তিনি শিক্ষকদের বিভিন্ন মতামত শুনেন। পরিশেষে সার্বিক বিষয়ে শিক্ষকদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন উপাচার্য।
Discussion about this post