শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ রবিবার (১০ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় সারা বিশ্বের মুসলমানের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইতোমধ্যে পশু কিনে কোরবানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুসল্লিরা।
আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অকুণ্ঠ আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ঈদের নামাজের পর আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার আশায় মুসলমানরা পশু কোরবানি করেন।মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশবাসীসহ বিশ্বের সব মুসলিম ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। তিনি বলেন, কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।
মহান আল্লাহর কাছে কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য শুদ্ধ নিয়ত ও বৈধ উপার্জন থাকা আবশ্যক উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করে এবং কোরবানির বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ বন্ধে সবাই সচেষ্ট থাকবেন বলে আমি আশা রাখি। পবিত্র ঈদুল আজহা সবার জন্য বয়ে আনুক কল্যাণ, সবার মধ্যে জেগে উঠুক ত্যাগের আদর্শ।’
ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করার অনুরোধ জানান। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই পবিত্র ঈদুল-আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আসুন, ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ঈদুল আজহার আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেই।
এবার ঈদে তিন দিন ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ঈদ উপলক্ষে শনিবার ৯ জুলাই, ১০ জুলাই রবিবার ঈদের দিন এবং ১১ জুলাই সোমবার ছুটি।
এদিকে, পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় শনিবার (৯ জুলাই) স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ৮ দফা নির্দেশনা সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে কোনও ধরনের আলোকসজ্জা করা যাবে না। প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে ঈদগাহে ও মসজিদে যেতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদ ও ঈদগাহের ওজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ঈদের নামাজের জামাতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদ অথবা ঈদগাহে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
Discussion about this post