অনলাইন ডেস্ক
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর নতুন করে একটি প্রস্তাব জোরালভাবে সামনে এসেছে তা হচ্ছে, পদ্মা-যমুনা ত্রিমুখী সেতু ও করিডোর মহাসড়ক নির্মাণ করে দেশের তিনটি ভূ-খণ্ডকে সরাসরি যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনার।
এবার প্রস্তাবিত ওই ত্রিমুখী সেতু করিডোর মহাসড়কের একটি স্পষ্ট কল্পচিত্র প্রকাশ করেছেন এর থিমদাতা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান। তিনি জানিয়েছেন, প্রস্তাবের উপযোগিতা সহজে বোঝানোর জন্য এ কল্পিতচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রী পাটুরিয়ায় আরেকটি সেতু তৈরির ব্যাপারে সমীক্ষার কথা বলেছেন এবং সেটি প্রায় শেষ দিকে বলেও উল্লেখ করেছেন।
এখানে আরেকটি সেতু না করে ভবিষ্যৎ বৃহত্তর পরিসরের চিন্তা করে দেশের তিনটি ভূ-খণ্ডকে কানেক্টিভিটির আওতায় এনে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর অভিলক্ষ্যে আরিচায় ত্রিমুখী সেতু করা ও করিডোর মহাসড়ক নির্মাণ উপযোগিতা সবচেয়ে বেশি। এই চিত্রে তা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আবারও বলেছেন, একই পদ্মা নদীর মাত্র ৪০-৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে আরেকটি সেতু তৈরি না করে বরং আরিচায় ত্রিমুখী সেতু নির্মাণ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। নতুন কল্পচিত্রে স্পষ্টতই ত্রিমুখী সেতু ও করিডোর মহাসড়কের চিত্র ফুটে উঠেছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম খুলনায় এলে তার কাছে এ প্রস্তাব ও কল্পিতচিত্রটি প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সারসংক্ষেপে তিনি উল্লেখ করেছেন, আরিচায় প্রস্তাবিত এ ত্রিমুখী সেতুর মোট দৈর্ঘ হবে ১৬ কিলোমিটার এবং সংযোগ সড়কসহ তা দাঁড়াবে ৩০ কিলোমিটারে বেশি, যা বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম সেতু ছাড়াও ত্রিমুখী সেতু হিসেবে এটি হবে প্রথম। এটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল এবং পূর্বে ঢাকা ভূ-ভাগের ৪৮টি জেলা যুক্ত করে প্রায় ১৩ কোটি মানুষের সরাসরি যোগাযোগ নিশ্চিত করবে। প্রতিদিন ত্রিমুখী সেতু দিয়ে ১৫-২০ হাজার গাড়ি চলাচল করতে পারবে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৩ শতাংশের ওপরে। সেতু ও সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কর্মসংস্থান হবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ৫ লাখ মানুষের।
দেশের সিমেন্ট, ইস্পাত, লৌহসহ আনুষাঙ্গিক কয়েক শত শিল্পের কমপক্ষে ৪-৫ বছরে কর্মচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হবে। অপরদিকে মাওয়া ভায়া আরিচা থেকে যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত করিডোর মহাসড়কের দূরত্ব হবে ১৬০ কিলোমিটার। এ মহাসড়ক ঘিরে নতুন ২টি অর্থনৈতিক জোন করা সম্ভব হবে। কমপক্ষে পাঁচ হাজার নতুন শিল্প ও কলকারখানা গড়ে উঠবে। প্রতিদিন করিডোর মহাসড়ক দিয়ে চলবে ৭ থেকে ৮ হাজার গাড়ি যা থেকেও টোল আদায় সম্ভব হবে। এই মহাসড়ক ও সেতু রাজধানী ঢাকার যানবাহন, জনবসতি ও শিল্পের চাপ কমাবে। পরিবেশের উন্নতিতে কাজ করবে। সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও বাড়াবে। পদ্মা সেতু নির্মাণের সাফল্য ও অভিজ্ঞতায় নতুন প্রস্তাবিত এ সেতু ও করিডোর মহাসড়ক নির্মাণ দেশের অর্থায়নেই সম্ভব বলে বলেও আশা করেন তিনি।
Discussion about this post