ঢাকা: করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরবরাহ করা পিপিই-মাস্কের মান যথাযথভাবে নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বক্সতো ঠিক আছে, কিন্তু বক্সের ভেতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা সে বিষয়ে নজরদারিটা একটু বাড়ানো দরকার। যিনি রিসিভ করবেন উনি যেন দেখেশুনে রিসিভ করেন।
সোমবার (২০ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কার্যক্রম সমন্বয়ে বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনায় সোমবার চতুর্থ ধাপে ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং মহাখালী থেকে সংযুক্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিও কনফারেন্সের একেবারে শেষভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় ঔষধাগার-সিএমএসডি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহ। এ সময় স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালও পাশে বসা ছিলেন।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগার-সিএমএসডি পরিচালক পিপিই-মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর মজুদ ও বিতরণের তথ্য তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এন-৯৫ মাস্ক লেখা আপনার বক্স, কিন্তু ভেতরে যে জিনিসটা সেটা সঠিক থাকে কিনা, এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার। এটা একটু নজর দেন। এখানে যেহেতু লাইভে অনেকে আছে তাই বলছি না। কিন্তু লেখা আছে এন-৯৫ কিন্তু ভেতরের জিনিস কিন্তু সব সময় সঠিকটা যাচ্ছে না।
‘বক্সতো ঠিক আছে, কিন্তু বক্সের ভেতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা নজরদারিটা একটু বাড়ানো দরকার বা যিনি রিসিভ করবেন উনি যেন দেখেশুনে রিসিভ করেন। খালি এইটুকু বললাম।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে একটা প্রশ্ন আছে, যে আমি আমাদের মন্ত্রীর কাছে কিছু ছবি পাঠিয়েছি- যারা সাপ্লাই দেয় তারা সঠিকভাবে সঠিক জিনিসটা দিচ্ছে কিনা? মহানগর হাসপাতালে কিছু জিনিস গেছে, পিপিই নাম দিচ্ছে বেশ ভালো, কিন্তু জিনিসগুলো বোধহয় ঠিক মতো যায়নি। এটা একটু আপনাদের খোঁজ করে দেখা উচিত।
‘আপনারা দিয়ে দিচ্ছেন বলে দিচ্ছেন, কিন্তু যারা সাপ্লায়ার তারা ঠিকমতো দিচ্ছে কিনা বা সঠিক জিনিস কিনছে কিনা। এটা একটু দেখা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি এরকম কিছু করে থাকে বা এই সাপ্লায়ার কে? আমি শুধু বললাম যে মহানগর হাসপাতালে এটা গেছে। ওটাতো করোনা ভাইরাসের জন্য ডেডিকেটেড। এ রকম যদি কিছু কিছু জায়গায় হয় সেটাতো ঠিক না। তো সেটা আপনারা যাদের নিযুক্ত করেন, যাদের ব্যবসাটা দেন বা যারা নেয় বা যারা সাপ্লাই দেয়। তারা সঠিকটা দিল কিনা?
কেন্দ্রীয় ঔষধাগার-সিএমএসডি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, একটি যাচাই কমিটি করা আছে। যে কমিটি যখন যে সরবরাহটা আসে তা সেটা পরীক্ষা করে দেখে। ইতোমধ্যে আমরা অনেক পিপিই ফেরত দিয়েছি নিম্নমানের হওয়ার কারণে, যার পরিমাণ এক লাখ ৭০ হাজার। দেশের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে হয়তো আমাদের ভুল হয়ে থাকতে পারে। এখন আমরা চাচ্ছি, এই ভুলগুলো যেন আর না হয়।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগার-সিএমএসডি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহ জানান, গতকাল পর্যদন্ত পিপিই গ্রহণ ছিল ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪০টি। বিতরণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৯৩ হাজার ১১৯টি। মজুদ আছে তিন লাখ ৭৩ হাজার ৯০১টি। পিপিইগুলোর মধ্যে ৭০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত এবং বাকি ৩০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা।
মাস্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এন-৯৫ মাস্ক সহজলভ্য না। এর সমমান বা কাছাকাছি কেএন-৯৫ বা পি-২। এগুলো সম্পূর্ণই হচ্ছে বৈদেশিক আমদানি নির্ভর। ইতোমধ্যে প্রায় ২ লাখ কেএন-৯৫ ও এফএফপি-২ মজুদ এসেছে। এগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।
কিটের মজুদও যথেষ্ট আছে বলে জানান শহিদ উল্লাহ।
ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন প্রদানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
গণভবন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
Discussion about this post