শিক্ষার আলো ডেস্ক
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস বলেছে, তারা ফল সেশনের (সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সেমিস্টার) আগে জমে থাকা ছাত্র ভিসা (স্টুডেন্ট ভিসা) সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী। এ জন্য কনস্যুলার বিভাগ গত শুক্রবার সপ্তাহান্তেও এ কাজে নিযুক্ত ছিল।
মার্কিন দূতাবাসের একজন কনস্যুলার কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, ‘আমরা সেশনজট দূর করার জন্য সবকিছু করছি, দূতাবাস সত্যিই এটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’
মার্কিন দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগ করোনা মহামারির কারণে অভিবাসী ও অ-অভিবাসী উভয় ভিসা আবেদন সেশনজটের সম্মুখীন হয়েছে। এরইমধ্যে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিশেষ করে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের ক্লাস করার জন্য ভিসা ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছেন।
কনস্যুলার বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ফল সেমিস্টার শুরুর আগে যতটা সম্ভব শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য শুক্রবার কাজ করেও বিশেষ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত শুক্রবার এক কনস্যুলার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘আমরা জানি এই সেশনজট একজন শিক্ষার্থীর জন্য কতটা হতাশাজনক। তাই আমরা সেশনজট দূর করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। এমনকি আমরা শুক্রবারও কাজ করছি। এটি আমাদের জন্য একটি অগ্রাধিকারমূলক কাজ। গত শুক্রবার দূতাবাস ভিসার জন্য আবেদনকারী ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এ ধরনের ভিসার উচ্চ চাহিদা মেটাতে মিশনকে অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৯ জুলাই শুক্রবার আরেকটি ‘সুপার ফ্রাইডে’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন দূতাবাস মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের নির্ধারিত ক্লাস শুরুর আগে ভিসা ইন্টারভিউ অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লট পেতে ব্যর্থ হওয়া শিক্ষার্থীদের জরুরি অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ দিচ্ছে।
মার্কিন দূতাবাসের কনসাল জেনারেল উইলিয়াম ডাওয়ারস ‘সুপার ফ্রাইডে’ উদ্যোগকে চিহ্নিত করে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নের অফার করা অনন্য সুযোগকে আমরা স্বীকৃতি দিচ্ছি ও স্টুডেন্ট ভিসা ইন্টারভিউকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
একজন আন্ডারগ্র্যাড ছাত্রী বলেন, ক্লাস শুরু হওয়ার আগে অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ পেতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি জরুরি অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। ১০ দিন পর ২২ জুলাই (শুক্রবার) নতুন সাক্ষাৎকারের তারিখ নিশ্চিত করে একটি ই-মেইল পেয়েছেন।
শুক্রবার ভিসা পাওয়ার পর কনস্যুলার বিভাগে তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ভিসাপ্রক্রিয়াটি খুব জটিল হবে, কিন্তু আমি ভুল করছিলাম। বাস্তবে এটি সহজ হয়েছে।’
এছাড়া সুপার ফ্রাইডে জরুরি সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ পাওয়া শীতা বিশ্বাস নামের একজন পিএইচডির শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি জরুরি সাক্ষাৎকারের অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ পেয়ে আনন্দিত, অন্যথায় আমার পিএইচডি প্রোগ্রামে যোগদান করা সম্ভব হতো না।’
মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে ও বর্তমানে এই সংখ্যা বার্ষিক সাড়ে আট হাজারেরও বেশি। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। দুই শতাধিক দেশ থেকে ৯ লাখ ১৪ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে এই শিক্ষাবর্ষে।
ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ওপেন ডোরস এর ২০২১-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে সারা বিশ্ব থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী পাঠানোর শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে ১৪ তম স্থানে রয়েছে। যেখানে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সূচকে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং ছিল ১৭।
Discussion about this post