করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও চীন এখন নতুন এক সংকটের মুখোমুখি। দেশটিতে সেরে ওঠা অনেক রোগীর শরীরে এখনো করোনাভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি প্রথম দিকে সংক্রমিত রোগীদের কারও কারও ক্ষেত্রে সুস্থ হওয়ার দুই মাস পরও করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসছে।
অনেক রোগীর সেরে ওঠার পর করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছিল দুই মাস পর পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসছে।
চীনে গত ৩১ ডিসেম্বর অজ্ঞাত কারণে মানুষের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নতুন ভাইরাসটির জিনোম সিকোয়েন্স করার পর গত ৯ জানুয়ারি চীনের বিজ্ঞানীরা জানান, এটি সার্স-করোনাভাইরাসের গোত্রের। এর দুই দিনের মাথায়, ১১ জানুয়ারি করোনার সংক্রমণে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। উহানে ৬১ বছর বয়সী একজন মারা যান। এরপর গতকাল বুধবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২৬ লাখ।
কিন্তু যে চীন থেকে সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে, সেখানে অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করেছে। গতকাল পর্যন্ত টানা তিন দিন ধরে করোনায় দেশটিতে কেউ মারা যায়নি। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও চীনের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের এখন নতুন এক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশটিতে এরই মধ্যে সেরে ওঠা রোগীদের অনেকের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি প্রথম দিকে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেরে ওঠার পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তাঁদের অনেকের করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসছে।
উহানের চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন দিন এমন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ ধরনের রোগীর মধ্যে কোনো উপসর্গ থাকে না। কিন্তু পরীক্ষা করলে দেখা যাচ্ছে তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই সেরে ওঠার পরপর করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু তার ৭০ দিন পর আবার পরীক্ষা করে ফলাফল পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের ৫০-৬০ দিন পর পরীক্ষা করেই ফলাফল পজিটিভ আসছে।
চীনের কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ পর্যন্ত ঠিক কত সংখ্যক এ ধরনের রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানায়নি। তবে দেশটির সংবাদমাধ্যম ও বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্যমতে, এ সংখ্যা নেহাত কম নয়।
শুধু চীনেই নয়, দক্ষিণ কোরিয়ায়ও অন্তত ১ হাজার রোগীর সেরে ওঠার চার সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পরও করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে। ইতালিতেও অনেক রোগীর সেরে ওঠার এক মাস পর করোনার ফলাফল পজিটিভ এসেছে পরীক্ষায়।
তবে এমনটা কেন হচ্ছে, তার যথাযথ ব্যাখ্যা এখনো খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। চীনের জিনিনতান হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট ঝ্যাং দিংইউ শুধু বলেছেন, এই সংকট দিনে দিনেই বড় হচ্ছে। উহানের এই হাসপাতালে করোনা সংক্রমিত সবচেয়ে সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে উহানের ঝংনান হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউয়ান ইউফেং বলেন, সার্স রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় এমনটা দেখা যায়নি। খবর রয়টার্স
Discussion about this post