শিক্ষার আলো ডেস্ক
৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৬৮ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে বেলায়েত লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করেছি। মায়ের অনুমতি পেলেই ভর্তি হব ইনশাল্লাহ।’
ইতোমধ্যে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। বেলায়েতের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সবাই প্রশংসা করেছেন। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের পাতায় পাতায় বেলায়েতের অদম্য স্পৃহাকে সম্মান জানাচ্ছেন সবাই।
এর আগে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখা ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি)ভর্তি পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। বেলায়েতের শেষ ভরসা ছিলো বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে স্বল্প খরচে বা বিনাখরচে পড়তে পারবেন। সেক্ষেত্রে রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর ডাকে সাড়া দেয়।
সংসারের অস্বচ্ছলতা, দরিদ্রতা আর বাবার অসুস্থতার কারণে ১৯৮৩ সালে লেখাপড়া থেকে ছিটকে গিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো বাধাই যেন দাবিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। সন্তানদের সঙ্গেই শুরু করেন লেখাপড়া।
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মৃত হাসেন আলী শেখ ও জয়গন বিবির ছেলে বেলায়েত শেখ। চলতি বছর তিনি এইচএসসি (ভোকেশনাল) পাস করেন ঢাকা মহানগর কারিগরি কলেজ থেকে। এর আগে ২০১৯ সালে বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল (ভোকেশনাল) পাস করেন।
তার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনার। সেই লক্ষ্যে সাইফুরস ভার্সিটি কোচিংয়ের মাওনা শাখায় ক্লাস করছেন তিনি। পেশায় তিনি একজন সাংবাদিক। জাতীয় দৈনিক করতোয়ার শ্রীপুর প্রতিনিধি তিনি। এছাড়া জেটিভি অনলাইনের প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন।
বেলায়েতের তিন সন্তান। বড় ছেলে এলাকার একটি কলেজের স্নাতকে পড়ছেন। মেয়েকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ানো স্বপ্ন ছিল তার। এজন্য রাজধানীর একটি কলেজে ভর্তি করান। কিন্তু সে পড়াশোনা শেষ না করেই গ্রামে চলে যায়। সেখানে এইচএসসি শেষে একটি কলেজের স্নাতকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়।
Discussion about this post