শিক্ষার আলো ডেস্ক
রাজধানীর আরও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার পেয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন নাকি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন সেটি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন তিনি। বেলায়েত জানান, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে ভর্তির অফার করা হয়েছে। তারা আমাকে জানিয়েছে, সেখানে আমাকে একটা ভালো ডিসকাউন্ট দেবে। আমি এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।
তিনি আরও বলেন, আমার মা অনেক অসুস্থ। তাকে রেখে রাজশাহীতে যেতে মন চাচ্ছে না। মা-ও চাচ্ছে না যে আমি রাজশাহীতে যাই। সেজন্য বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। মা রাজি না হলে আমি রাজশাহীতে ভর্তি হব না, স্টামফোর্ডে ভর্তি হব।
বেলায়েত জানান, ইতোমধ্যে রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার পেয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ালেখার সুযোগ করে দিতে চান। তবে রাজশাহীতে গেলে তিনি খরচ চালাবেন কীভাবে সেটি নিয়ে চিন্তায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি চাচ্ছি ঢাকার মধ্যে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। ঢাকায় থাকলে আমি সাংবাদিকতা পেশাটা চালিয়ে যেতে পারবো। এছাড়া পরিবারের সাথেও থাকা হবে। যেখানে খরচ কম হবে সেখানেই ভর্তি হবেন বলেও জানান তিনি। তাই সব বিবেচনায় স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভালো হবে।
নিজের লালিত স্বপ্ন পূরণে ৫৫ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন গাজীপুরের বেলায়েত শেখ। ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সফলতা পাননি। শেষ চেষ্টা হিসেবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন।
গাজীপুরের মাওনার বাসিন্দা বেলায়েত শেখ ১৯৮৩ সালে প্রথমবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও টাকার অভাবে সে বছর নিবন্ধন করতে পারেননি। ১৯৮৮ সালে তিনি আবারও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু সে বছর সারা দেশে বন্যার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি।
এর কয়েক মাস পরে তিনি ফটোগ্রাফার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ‘দৈনিক করতোয়া’ পত্রিকার গাজীপুরের শ্রীপুর প্রতিনিধি।
কর্মজীবন শুরুর পরে বেলায়েত আর পড়ালেখা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ছোট ভাইকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নও থেকে যায় অধরা। বেলায়েত ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার মেয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও কলেজে যেতে আগ্রহী ছিল না। তার বড় ছেলেও পড়ালেখায় আগ্রহী না। তাই নিজে নেমে পড়লেন ভর্তি যুদ্ধে। নিজের অদম্য স্পৃহার জলন্ত অগ্নিশিখায় ছিনিয়ে নিলেন সাফল্য !
Discussion about this post