অনলাইন ডেস্ক
নবম শতকের প্রথমভাগে অনেক পরিবারই পশ্চিমের ব্যস্ত নগরী ‘ফেজ’এর অভিবাসী হতে চাইতেন। ফেজ ছিল মুসলিম-পশ্চিম তথা আল-মাগরেবের অন্যতম সম্ভাবনাময় নগরী, যা মানুষের মনে সৌভাগ্যের ধারণা ও পরম সুখের প্রতিশ্রুতি দিত।
প্রভাবশালী এই ইসলামী নগরীতে ঐতিহ্যবাহী ও বিশ্বজনীন- উভয় ধরনের ধর্ম ও সংস্কৃতির সমাবেশ হয়েছিল। আর সেখানেই গড়ে উঠেছিল বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ‘কারুইয়িন’।
বিদ্যাগ্রহণের সবচেয়ে উচ্চ স্তর ‘বিশ্ববিদ্যালয়’। যেখান থেকে দেওয়া হয় যোগ্য শিক্ষার্থীর সনদ। কিন্তু কতজন জানেন, বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা একজন মুসলিম নারী! তার নাম ফাতিমা আল-ফিহরি।

হিস্টিহিরোইন.কম-এর তথ্য- ফাতিমা আল-ফিহরি ছিলেন এক বণিক পিতার সন্তান। উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার সম্পত্তি লাভ করেন। এবং বিয়ের অল্প দিনের মধ্যেই বিধবা হয়েছিলেন। পরে এই বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে হাত দেন। ফাতিমার উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি শেষ হতে ১৮ বছর লেগেছিল। এই সময়ের মধ্যে তিনি নিয়মিত রোজা থাকতেন।
তিউনিশিয়ার কাইরুয়ানে একটি বিদ্রোহ হওয়ার পর ফাতিমার পরিবার মরক্কোর ফেজ নগরীর অভিবাসী হয়েছিলেন।

‘কারুইয়িন বিশ্বাবদ্যালয়’ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে গণিত, ব্যাকরণ, চিকিৎসা এবং ইসলামিক শিক্ষা প্রদান করা হয়। মজার বিষয় হলো সেখানে এখনো প্রাচীন ঐতিহ্যগতভাবে শিক্ষা প্রদান করা হয়। যেখানে শিক্ষার্থীরা পণ্ডিত বা শেখের চারপাশে অর্ধবৃত্তাকারে বসে।
বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণধার ফাতিমা আল-ফিহরি ৮৫৯ সালে উচ্চশিক্ষার অগ্রপথিক হিসেবে তিনি মরক্কোর ফেজ নগরীতে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।

ঐতিহাসিকদের মতে, এটি বিশ্বের প্রাচীনতম সনদ বিতরণকারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়। ফাতিমা আল-ফিহরি নিজে এর নির্মাণকাজের তদারকি করেছিলেন এবং নির্মাণ প্রক্রিয়ায় দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে প্রাচীন গ্রন্থাগার। যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। আর সেটিও প্রতিষ্ঠা করেছেন এক মুসলিম নারী। যার নাম আজিজা চাউনি।
সূত্র: টিআটিওয়ার্ল্ড, বিবিসি, ডয়েচেভেলে
Discussion about this post