নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথম শ্রেণি ও আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে। আজ সোমবার (৫ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ নীতিমালা জারি করে। মাধ্যমিকে আসন্ন সব ভর্তি কার্যক্রমে নীতিমালাটি অনুসরণ করা হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ৬ বছর হতে হবে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোয় বয়স নির্ধারণের বিষয়টি ২০২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। ভর্তির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় নির্ধারণ করবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
ভর্তির নীতিমালাটি দেখুন এখানে
শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অনলাইন আবেদন ও লটারির তারিখ নির্ধারণ করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। ২০২২ শিক্ষাবর্ষ হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
ঢাকা মহানগরীর সরকারি বিদ্যালয় সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর ঢাকা মহানগরীর সকল সরকারি বিদ্যালয়ের আওতাধীন ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করবে।
শিক্ষার্থী প্রতি ক্লাস্টারের একই আবেদনে সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পাদন হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।
ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
ভর্তির জন্য আবেদন এবং শিক্ষার্থী নির্বাচনের পদ্ধতি
ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করবে। সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভর্তির আবেদন ও আবেদন ফি গ্রহণ এবং ডিজিটাল লটারির ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাবে। ওই তালিকা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি কমিটি কাগজপত্র যাচাই করে নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
যৌক্তিক কোনও কারণে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হতে না পারলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লটারি প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদন করবে। তবে সেক্ষেত্রে লটারির দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মহানগরীর ভর্তি কমিটির নিকট থেকে প্রাপ্ত নির্বাচিতদের তালিকা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে এবং নির্বাচিতদের তালিকা নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দিবে। কোন অবস্থাতেই নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকার বাইরে কাউকে ভর্তি করা যাবে না।
ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠান ও ফলাফল তৈরি
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর লটারি অনুষ্ঠানের কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান আবেদন ও ডিজিটাল লটারির ফলাফল প্রকাশের যাবতীয় তথ্য ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটির নিকট প্রদান করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে লটারির কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদন ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ নীতিমালা অনুযায়ী শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত প্রথম লটারির সমসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম অপেক্ষমান তালিকা নির্বাচন করতে হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে লটারির মাধ্যমে দ্বিতীয় অপেক্ষমান তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।
সংরক্ষিত কোটা
মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকার শর্তে ভর্তির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।
কোনও আসন শূন্য থাকলে তা অপেক্ষমান তালিকা থেকে পূরণ করতে হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ও অধীনস্থ দফতর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষ্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয় সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হবে।
কোনও প্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোন যদি আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকে সে সকল সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোনকে সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে এ সুবিধা কোনও দম্পত্তির সর্বোচ্চ ২ সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
Discussion about this post