অনলাইন ডেস্ক
আজ (১৮ ফেব্রুয়ারি) পবিত্র শবে মেরাজ। ফারসি শব্দ ‘শব’ অর্থ রাত এবং আরবি ‘মেরাজ’ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ বা ঊর্ধ্বগমন। মহিমান্বিত এই রাতে দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক আল্লাহতায়ালার হুকুমে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ঊর্ধ্বলোকে গমনের সৌভাগ্য লাভ করেন। তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সাক্ষাৎ লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে একই রাতে দুনিয়ায় ফিরে আসেন। এ কারণেই রাতটি মুসলিমদের কাছে অধিক পবিত্র।
ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত মুহাম্মদের (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির একাদশ বছরের (৬২০ খ্রিষ্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিনগত রাতে হযরত জিব্রাঈলের (আ.) সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর আরশে আজিমে মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন।
পবিত্র মেরাজের যাত্রা শুরু হয় মসজিদে হারাম থেকে। হজরত জিব্রাইল (আ.) বোরাকে করে নবীজিকে বায়তুল মোকাদ্দাস নিয়ে যান। ওখানে তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়েন। ওই নামাজে নবীজি (স.) সব নবীর ইমামতি করেন। এরপর ঊর্ধ্বাকাশে যাত্র করেন। যাত্রাপথে প্রত্যেক আসমানে পূর্ববর্তী সম্মানিত নবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। এরপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পবিত্র মেরাজের রাতে বিশ্বনবী (স.) স্বচক্ষে বেহেশত-দোজখ দেখেছেন। অনেক পাপের শাস্তি প্রত্যক্ষ করেছেন। সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ, আরশ-কুরসি প্রভৃতি সামনাসামনি সশরীরে দেখা, সর্বোপরি মহান রবের সঙ্গে পবিত্র দিদার লাভ করাসহ অবলোকন করেছেন সৃষ্টিজগতের অপার রহস্য।
রজব মাস হলো হিজরি সনের বিশেষ ও মহিমান্বিত একটি মাস। এ মাস আসে রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে। তাই এই রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এ মাসের বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এ মাস আল্লাহ প্রদত্ত চারটি সম্মানিত মাসের (আশহুরে হুরুমের) একটি।
মুসলিমরা অলৌকিক ও ঐতিহাসিক এ ঘটনার স্মারক হিসেবে প্রতিবছর রাতটিকে শবে মেরাজ হিসেবে পালন করেন। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও রাতটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ, রোজা রাখা,ওয়াজ-মাহফিল, জিকির, দোয়া-দরুদ ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটান।
Discussion about this post