এস এম আক্কাছ উদ্দিন, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম
আবদুল বাসেত‘ভেবেছিলাম, এই বুঝি জীবন শেষ। কিন্তু তারপরও মনোবল শক্ত রেখেছি। ভরসা রেখেছি নিজের ও সৃষ্টিকর্তার ওপর। ভেঙে না পড়াই বড় ওষুধ। এতে করোনা জয় অবশ্যই সম্ভব। কোনো অসুখকেই ছোট করে দেখা উচিত নয়।’
এটা করোনাযুদ্ধে জয়ী এক চিকিৎসকের কথা। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোহাম্মদ আবদুল বাসেত। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পেয়ে শুক্রবার তিনি ঘরে ফিরেছেন। এখন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে আছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৮ এপ্রিল আবদুল বাসেতের শরীর থেকে তৃতীয়বার নমুনা সংগ্রহ করে ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফলাফল নেগেটিভ আসে। ২২ এপ্রিল তাঁর শরীরে করোনা শনাক্ত হলে তিনি আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে যান।
আবদুল বাসেত বলেন, তিনি ধারণা করছেন, কোনো প্রবাসী কিংবা ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জফেরত ব্যক্তি কিংবা তাঁদের পরিবারের কারও সংস্পর্শে এসে তাঁর শরীরে করোনা ছড়িয়েছে। দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার অন্তত এক মাস আগ থেকে তিনি কর্মস্থলের বাইরে কোথাও যাননি।
চিকিৎসক বাসেত বলেন, ‘এপ্রিলের ১৫ তারিখ আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফ্লু কর্নারে জ্বর-সর্দিতে ভোগা রোগী এসেছিলেন। যাঁদের কারও কারও আপনজন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জফেরত। সেদিন রাতেই আমার খারাপ লাগা শুরু হয়। ১৬ এপ্রিল হাসপাতালে যেতে পারিনি। ১৭ এপ্রিল আমি নিজেই জ্বরে আক্রান্ত হই। ২১ এপ্রিল টেস্টের জন্য নমুনা দিলাম। ২২ তারিখ ফলাফল এল পজিটিভ।’
বাসেত বলেন, ‘আমি ভেঙে পড়িনি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সবাই সাহস দিয়েছেন। নিজের ওপর ভরসা রেখেছি।’ তিনি বলেন, জ্বর আসার পর থেকে ওষুধ খাওয়া শুরু করে দেন বাসেত। কোভিড-১৯ ধরা পড়ার পর আইসোলেশনে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসায় আস্তে আস্তে কমে যায়। তিনি বলেন, ‘ওষুধের পাশাপাশি গরম পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া নিয়মিত লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া করতে হবে। প্রচুর ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
২৯ বছর বয়সী এই চিকিৎসক বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারকে মানসিক সাহস জোগাতে হবে। করোনার অনেক স্তর আছে। যাঁদের উপসর্গ কম, তাঁরা বাসায় বসেও চিকিৎসা নিতে পারবেন। সৌজন্যে ০প্রথম আলো
Discussion about this post