শিক্ষার আলো ডেস্ক
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো এবার বৃত্তির আওতায় আনা হচ্ছে মাদ্রাসার ইবতেদায়ি স্তরের শিক্ষার্থীদেরও । সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি দিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। ফলে খুব শীঘ্রই ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীরাও মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তির আওতায় আসবে।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসাইন বলেন, ‘ইবতেদায়ি বাদে সব মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আমরা ১২ হাজার ৬৯ জন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি দিয়েছি। আর ইবতেদায়ি স্তরের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে নির্দেশনা এলে মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তির আওতায় আসবে তারাও।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায , সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু প্রাথমিক স্তরে শিক্ষাদানকারী ইবতেদায়ি মাদ্রাসা পরিচালিত হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে। মাদ্রাসা দেখভালের দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর আগে থেকে দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ফলে উপবৃত্তির বাইরে থেকে যায় ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে দেশের সব শিক্ষার্থীকে বৃত্তির সুযোগের আওতায় আনতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে স্বীকৃত ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তথ্য চাওয়া হয় মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে। পরে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রণালয়ে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বৃত্তির জন্য সারসংক্ষেপ পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। ওই সারসংক্ষেপ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে মাদ্রাসা অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে, ১৯৯৪ সালের একই পরিপত্র অনুযায়ী, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত হয় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা। এসব প্রতিষ্ঠানে শুরু থেকেই প্রত্যেক শিক্ষককে ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করা হয়। কিন্তু ইবতেদায়ি মাদ্রাসা বেসরকারিই থেকে যায়। যদিও দাখিল মাদ্রাসার সঙ্গে সংযুক্ত ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হিসেবে বেতন-ভাতার সরকারি অংশ শতভাগ পাচ্ছেন। কিন্তু স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক পাচ্ছেন আড়াই হাজার টাকা করে। আর সহকারী শিক্ষকরা পাচ্ছেন মাত্র ২ হাজার ৩০০ টাকা করে।
মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) মাদ্রাসা রয়েছে ৬ হাজার ৯৯৮টি। তবে ব্যানবেইসের ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ৩ হাজার ৪৩৩টি। এরমধ্যে অনুদান পাওয়া মাদ্রাসার সংখ্যা ১ হাজার ৫১৯টি। তবে বর্তমানে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা চলমান রয়েছে ১ হাজার ৭৯টি।
Discussion about this post