নিউজ ডেস্ক
৩৯তম বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও চূড়ান্তভাবে নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন ৭১ জন প্রার্থী। ভুক্তভোগীরা বলছেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনেকেই শত্রুতা করে ভুল তথ্য দিয়ে থাকেন। এরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাইহোক আমাদের আবেদন, আমাদের নিয়োগ দেওয়া হোক। আমরা সেবা করতে চাই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্যাডার হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত এই ৭১ জনের মধ্যে ৬৬ জন সহকারী সার্জন এবং ৫ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন। ৭১ জনের মধ্যে আবার ১০ জনই মুক্তিযোদ্ধা কোটার। এদের অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রিতে ট্রেনিংরত আছেন। এর মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশন ট্রেনিং করেছেন। এমনকি বঞ্চিতদের প্রায় সবাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইনে দেওয়া কোভিড-১৯ এর বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারা সেই সনদ পেয়ে বিনামূল্যে সরকারের নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে নাস্তানাবুদ গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশেও হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুত চিকিত্সক নিয়োগও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সব যোগ্যতা থাকার পরও নিয়োগ পাচ্ছেন না সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশপ্রাপ্ত এই ৭১ জন চিকিৎসক।
সূত্র জানায়, ৪ হাজার ৭৯২ চিকিৎসককে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে নিয়োগ দিতে গত বছরের ৩০ এপ্রিল সুপারিশ করে পিএসসি। গত ১৮ নভেম্বর থেকে গত ২৩ মার্চ পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪ দফায় ৪ হাজার ৭২১ জনকে নিয়োগ দেয়। দুর্ভাগ্যজনক হলো নিয়োগ পাননি ঐ ৭১ জন। অথচ সরকারের চাহিদা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার পিএসসি ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে আরও ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সুপারিশ করেছে।
৩৯তম বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগের জন্য পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত হন চিকিৎসক জাহিদ হাসান এবং তার স্ত্রী। তারা দু’জনই রাজশাহী মেডিকেল থেকে পড়াশোনা করেছেন। একই সঙ্গে এমবিবিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করে এফসিপিএস প্রথম পর্ব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্সি কোর্সে চান্স পান। কিন্তু স্ত্রী চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেলেও কপাল পুড়েছে স্বামী জাহিদ হাসানের। তার স্ত্রী ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সরকারের প্রকাশিত গেজেটে গেজেটভুক্ত হলেও এখনো নিয়োগ পাননি তিনি।
নিয়োগ বঞ্চিত জাহিদ বর্তমানে জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটে কার্ডিওভাস্কুলার অ্যান্ড থোরাসিক সার্জারিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ট্রেনিং করছেন। তিনি জানান, আমিসহ ৩৯তম বিসিএসে পুলিশ ভেরিফিকেশনে ৭১ জন প্রার্থীর নিয়োগ আটকে আছে। কী আমাদের অপরাধ তা জানি না। তিনি সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ করেন দুর্যোগ মুহূর্তে তাদের নিয়োগ দেওয়া হোক।
পিএসসির সুপারিশের পরও চূড়ান্ত নিয়োগ না হওয়ায় জাহিদ হাসান, সাদিয়া আফরিন, তানিয়া সুলতানা, ইব্রাহিম, এ বি এম মেহেদী, আবদুল্লাহ আল মামুনসহ চিকিৎসকরা গত ২৩ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। এর আগে নিয়োগ পেতে জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন মহলে ধরনা দিয়েও কোনো ফল পাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ৭১ জনের বিষয়টি আমরা পজিটিভলি দেখছি। ভেরিফিকেশন কার্যক্রম চলমান। দ্রুতই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Discussion about this post