শিক্ষার আলো ডেস্ক
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব কলেজে অ্যালামনাই গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে পরিপূর্ণভাবে অ্যালামনাই গঠন করবে এবং সেটি আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে কলেজগুলোর মানোন্নয়নে অ্যালামনাইরা অবদান রাখার সুযোগ পাবে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) খুলনা সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের ১ম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান। কলেজটি ৫৮ বছরে পদার্পণ করেছে।
দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেন, আমার কোনো শিক্ষার্থী যেন অর্থাভাবে লেখাপড়া বন্ধ না করে। লেখাপড়ার জন্য দারিদ্র্য কোনো বাধা নয়। আমি অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকদের আহ্বান জানাব– যদি এমন কোনো শিক্ষার্থী থাকে যে অর্থকষ্টে পড়তে পারছে না, তাহলে আমাকে জানাবেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেসব শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব ইতোমধ্যে আমরা গ্রহণ করেছি। তাদের বৃত্তি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে কোনো শিক্ষার্থী অর্থাভাবে পড়তে পারবে না, সেটি হতে দেব না।
শিক্ষকদের মানসম্পন্ন গবেষণার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আপনারা গবেষণা করুন। আমরা গবেষণায় কিছুটা পিছিয়ে আছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল রয়েছে। ভালো গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক শিক্ষককে তহবিল দেওয়া হবে। আমাদের গ্রন্থ রচনা প্রকল্প রয়েছে। আপনারা ভালো টেক্সট বই লেখেন- এসব বই ছাপানো থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সব দায়িত্ব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ৩০ লাখ শহীদের আত্মাহুতি এবং দুই লাখ মা-বোনের নির্যাতন সয়ে লাল-সবুজের মানচিত্র- বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। ক্রমাগত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এই পুরো বাংলাদেশকে আমরা অপূর্ব শক্তিমত্তায় এক অনন্য সৌন্দর্যে নতুন ধারায় তৈরি করতে চাই। আপনারা এখানে যারা মিলেছেন, নিশ্চয়ই আপনাদের মধ্যে একটা স্বপ্ন আছে, একটি ব্যঞ্জনা আছে, একটি সুর আছে। আমরা এমন একটি অপূর্ব দেশ গঠন করতে চাই– যেখানে আমাদের প্রতিটি সন্তান আগামী দিনে আরও মেধার স্বাক্ষর রাখবে।
ড. মশিউর রহমান বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন– আমাদের চার লাখ শিক্ষার্থী আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে আইসিটি, সফট স্কিল বাধ্যতামূলকভাবে শিখবে। তারা ইতোমধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস পড়ছে। এসব পাঠ গ্রহণ করে আমাদের সন্তানেরা আরও বেশি যোগ্য হবে, দক্ষ হবে। আমরা ভেবেছিলাম কোভিড উত্তর পৃথিবীতে মানুষ আরও বেশি মানবিক হবে। কিন্তু আমরা দেখছি পৃথিবীব্যাপী যুদ্ধ চলছে। অনেক নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে। নিষ্পাপ শিশুরা আজ রক্তাক্ত হচ্ছে, মা অনিশ্চিত পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে আছে- এমন পৃথিবী আমরা চাইনি। এই প্রিয় দেশমাতৃকা আমাদের। আমরা এটাকে গড়ে তোলার জন্য যা যা করার তাই করব। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে বিশ্বপরিমণ্ডলে আত্মমর্যাদায় গড়ে তুলব।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মো. বদিউজ্জামান, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা, পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী মো. অহেদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম।
Discussion about this post