নিজস্ব প্রতিবেদক
অবশেষে ক্লাস পরীক্ষা ও ভর্তি বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পেলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় । দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী জুনের আগে নতুন সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সেই সাথে নতুন সেমিস্টারের ক্লাস জুলাইয়ের আগে শুরু করা যাবে না। তবে চলতি সেমিস্টারের ক্লাস-পরীক্ষা অনলাইনে চলমান রাখতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ২৩ টি নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি)। বৃহস্পতিবার (৭ মে) ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কার্যালয় স্মারকের মাধ্যমে এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইউজিসির নিয়ম মেনে আগামী জুন মাস থেকে নতুন সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আর নতুন সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম আগামী পহেলা জুলাইয়ে শুরু করা যাবে। চলমান পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলে নতুন সেমিস্টারের ক্লাস অনলাইনে নেয়া যাবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পূর্বের নিয়মেই কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় চলমান সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে সন্তোষজনক ভাবে পরিচালনা করেছে; তাদের চলমান সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য দুইটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই দুইটির যেকোনো একটি পদ্ধতি অনুসরণ অনুসরণ করতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে একটি হলো অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা দুটিই নেয়া যাবে। তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর ব্যবহারিক পরীক্ষা কোনোভাবেই অনলাইনে নেয়া যাবে না। পাশাপাশি অনলাইন পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা অবলম্বন করতে হবে।
দ্বিতীয়টি হলো অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস সম্পন্ন করে পরবর্তী সেমিস্টারের কোনো এক সময় পরীক্ষা নিয়ে নেয়া। এক্ষেত্রে বড় পরিসরে পরীক্ষা নিতে প্রতিবন্ধকতা থাকলে এর আকার সীমিত করা যাবে। ফলাফল প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় করোনা পরিস্থিতির আগে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ ক্লাস সম্পন্ন করেছে তারা এখন কোনো ক্লাস-পরীক্ষা না নিলেও চলবে। শিক্ষার্থীদের মিডটার্ম, কুইজ, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন যথাযথ মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা যাবে।
আর যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস নিতে পারেনি সেই সকল বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে তাদের চলতি সেমিস্টারের অসমাপ্ত ক্লাস-পরীক্ষা সম্পন্ন করতে চায় তা সুস্পষ্টভাবে লিখিত আকারে আগামী ১৭ মের মধ্যে ইউজিসিকে জানিয়ে অনুমোদন গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি আদায়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনা সংকটের কারণে আর্থিক সংকটে পরা শিক্ষার্থীদেব ক্ষেত্রে মানবিক দিক বিবেচনায় রেখে টিউশন ও অন্যান্য ফি মওকুফ, হ্রাস ও ইনস্টলমেন্ট প্রদানের সুযোগ রাখতে হবে। এসময়ে ফি আদায়ে মানসিক চাপ প্রদান সমীচীন নয় উল্লেখ করে তা পরিহার করে শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগও অবারিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল অনলাইনে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণে একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চলমান অচলাবস্থায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি নির্দেশনা তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয় ইউজিসিকে। সে আলোকে আজ ২৩ টি নির্দেশনা প্রদান করেছে ইউজিসি।
উল্লেখ্য, ইউজিসির হিসাবে বর্তমানে দেশের ৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে। এর মধ্যে ৫৬টি বেসরকারি ও বাকি ৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের হার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ।
Discussion about this post