তারুণ্যের সচেতনতার আহ্বানে পালিত হলো এবারের বিশ্ব থ্যালাসিমিয়া দিবস।
শুক্রবার (৮ মে) করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে অনলাইনে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে দিবসটি পালন করেছে বাংলাদেশ থ্যালাসিমিয়া ফাউন্ডেশন, সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব ও প্ল্যাটফর্ম।
দিবসটিতে বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘তারুণ্য থেকে শুরু হোক থ্যালাসিমিয়া প্রতিরোধ, বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাত শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ লোক থ্যালাসিমিয়া রোগীর বাহক। থ্যালাসিমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে সাত হাজার থ্যালাসিমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ডা. মনজুর মোরশেদ।
তিনি বলেন, থ্যালাসিমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। থ্যালাসিমিয়া আক্রান্ত রোগীদের শরীরে রক্তের লোহিত কণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না। ফলে এদের মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। থ্যালাসিমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে ১-২ ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে রোগী রক্তশূন্যতায় মারা যায়। মানব কোষে রক্ত তৈরি করার জন্য ২টি জিন থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্ত তৈরির একটি জিনে ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসিমিয়া বাহক বলে, আর যদি দু’টি জিনেই ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালিসিমিয়া রোগী বলে।
তিনি বলেন, শিশু জন্মের ১-২ বছরের মধ্যে থ্যালাসিমিয়া রোগ ধরা পড়ে। এ লক্ষণগুলো হল – ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন ইনফেকশন, শিশুর ওজন না বাড়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি। থ্যালাসিমিয়া রোগের কোনোও সহজলভ্য স্থায়ী চিকিৎসা বা টিকা নেই। এ রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রতিরোধ। স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি থ্যালাসিমিয়া বাহক হন, শুধুমাত্র তখনই সন্তানদের এ রোগ হতে পারে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দু’জনের একজন যদি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনও এ রোগ হবে না। তাই বিয়ের আগে থ্যালাসিমিয়া বাহক কিনা সবারই জেনে নেওয়া দরকার।
Discussion about this post