নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক)।
শনিবার (৯ মে) সকালে চমেক হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পরীক্ষা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. এহসানুল হক কাজল। সকাল ১১টার দিকে পিসিআর ল্যাব পরিদর্শন করতে যান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধারে পাওয়া একটি মেশিন দিয়ে আজ থেকে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। একটি পিসিআর মেশিনে সর্বোচ্চ ৮০টি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব। আমরা প্রতিদিন ৫০টি করে নমুনা পরীক্ষার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজও ৫০টি নমুনা নিয়ে কাজ চলছে।
চমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, চমেক বায়োকেমিস্ট্রি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ১১ জন চিকিৎসক রয়েছেন। তার মধ্যে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে রয়েছেন সাতজন। একজন সহযোগী অধ্যাপক, দুজন সহকারী অধ্যাপক ও চারজন এমফিল করা প্রভাষক। বায়োকেমিস্ট্রি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসকরা পালা করে ল্যাবের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া বায়োকেমিস্ট্রি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে চারজন টেকনোলজিস্ট রয়েছেন। কলেজে বিভিন্ন বিভাগে আরও সাতজন রয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ তাদেরও পিসিআর ল্যাবের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন। সবমিলিয়ে পিসিআর ল্যাবে ১১ টেকনোলজিস্ট কাজ করবেন।
এদিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তের পরীক্ষার ল্যাব পুরোদমে চালু হলে চট্টগ্রাম মহানগরবাসীর করোনার পরীক্ষা এখানেই করা হবে।
প্রসঙ্গত, ফৌজদারহাট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার শুরু হয় গত ২৬ মার্চ। দ্বিতীয় ল্যাব হিসেবে গত ২৫ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কার্যক্রম শুরু করে। বিআইটিআইডি কর্তৃক সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে সিভাসু’র ল্যাবে।
গত ৭ মে বিআইটিআইডিতে ১৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ১৯ জনের। এছাড়া শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) পক্ষ থেকে জানানো হয় বৃহস্পতিবার ৬১টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়ে মোট ৪০ জনের। যা চট্টগ্রামে এ যাবৎকালের রেকর্ড। এছাড়া বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার এক রোগী করোনা শনাক্ত হন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার (৭মে) একদিনে চট্টগ্রামে ৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
শুক্রবার (৮ মে) নতুন শনাক্ত ১২ জনসহ এখন চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ২০৭ জন। এর মধ্যে ঢাকা, রাজবাড়ী, কুমিল্লা ও কক্সবাজারে শনাক্ত সাত ব্যক্তিও রয়েছেন।
চট্টগ্রামে এক শিশুসহ মোট ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া আইসোলেশনে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ছয়জন। মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ পাওয়া যায়।
এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ৪৯ জন। তাদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। বর্তমানে ১৯৫ জন রোগী আইসোলেশনে আছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২০৯ জন।
Discussion about this post