মুহতারিমা রহমান
ব্রিটিশ কাউন্সিল ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি (লেটার অব ইনটেন্ট- এলওআই) স্বাক্ষরিত হয়েছে। তরুণ জনগোষ্ঠীকে প্রয়োজনীয় দক্ষতায় সুদক্ষ করে তোলা ও তাদের সম্ভাবনার বিকাশের মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়নে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্বায়নের এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষেত্রে দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে তুলতে এই অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রাজধানী ঢাকার মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত যুব ভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই অংশীদারিত্বে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড ১) ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান ও ব্রিটিশ কাউন্সিল এর ডিরেক্টর প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এতে প্রাথমিকভাবে তিনটি প্রধান বিষয়ে ৩ বছর-মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা করা হবে।
তরুণদের দক্ষ করে তোলা: তরুণ জনগোষ্ঠীকে চাকরি ও উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে তুলতে ব্রিটিশ কাউন্সিল আর্থিক স্বাক্ষরতা, ক্রিটিক্যাল থিংকিং (গভীরভাবে চিন্তা করার দক্ষতা) ও যোগাযোগের মতো দক্ষতার বিকাশে প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি ও প্রদান করবে।
তরুণদের মতকে প্রাধান্য দেয়া: এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কর্মশালা ও গবেষণা সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করে দেশজুড়ে তরুণদের সাথে যোগযোগ স্থাপনে ভূমিকা রাখা হবে। জাতীয় যুব নীতি ও প্রোগ্রামে তাদের মতামত ও প্রত্যাশা তুলে ধরা হবে, যেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করা যায়।
তরুণদের গবেষণায় বিনিয়োগ করা: ব্রিটিশ কাউন্সিল তরুণ বাংলাদেশিদের প্রতিকূলতা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনাকে বিস্তারিতভাবে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের ‘নেক্সট জেনারেশন বাংলাদেশ’ গবেষণা উদ্যোগে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করবে। এই গবেষণা তরুণদের উন্নয়নে উপাত্ত-নির্ভর প্রয়োগ ও নীতি নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন-ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘আইইএলটিএস প্রাইজ ২০২৩’ পেলেন সাত বাংলাদেশি
এ সকল উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করবে, যা সামনে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের টেকসই পরিবর্তন নিশ্চিত করবে। এই অংশীদারিত্বের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. সাইফুজ্জামান বলেন, “যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাথে ব্রিটিশ কাউন্সিল কাজ করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আগামীতে বাংলাদেশের তরুণদের বিকশিত করে জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে অবদান রাখতে সক্ষম হবো বলে আশাবাদী আমরা।”
এ সময় ডেভিড নক্সও তার বক্তব্যে তরুণদের অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরকে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যের সাথে তাল মিলিয়ে তরুণদের দক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি । বাংলাদেশ ও বিশ্বে তরুণ জনগোষ্ঠীর সাথে কাজ করাকে ব্রিটিশ কাউন্সিল অগ্রাধিকার দেয়। দেশের তরুণদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ব ও দেশজুড়ে পরিচালিত নানা প্রকল্পের অভিজ্ঞতা ও কারিগরি দক্ষতাকে কাজে লাগানো হবে। এই চুক্তিস্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমাদের দুই পক্ষের অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদী আমরা।”
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সকল ডিরেক্টর, ডেপুটি ডিরেক্টর ও অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর সহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের হেড অব এডুকেশন ও নন-ফরমাল এডুকেশন টিমের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। শক্তিশালী এই অংশীদারিত্ব তরুণদের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টাকেই তুলে ধরে।
Discussion about this post