অনলাইন ডেস্ক
মৃত সাগর, বা মরে যাওয়া সাগর, নামটা শুনতে কিছুটা অদ্ভুত হলেও, পৃথিবীতে সত্যিই এমন একটি সাগর রয়েছে যার নাম ‘ডেড সি’। তবে সাগর বলা হলেও এটি মূলত একটি হ্রদ যার সর্বোচ্চ গভীরতা ৩০৪ মিটার।
মধ্য প্রাচ্যে অবস্থিত এই মৃত সাগরের পূর্ব সীমান্তে রয়েছে জর্ডান এবং পশ্চিম সীমান্তে যথাক্রমে ইসরাইল ও প্যালেস্টাইন। এর পৃষ্ঠভাগ ও তীরদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪২৯ মিটার নিচে অবস্থিত। এই সাগরের পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ প্রায় ৩৪.২%, যা সমুদ্রের পানির চেয়ে ৮.৬ গুণ বেশি লবণাক্ত। এই অত্যধিক লবণাক্ততার কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে জলজ প্রাণীরা বসবাস ও জীবনধারণ করতে পারে না, তাই এই সাগরে কোনো প্রাণের বাস নাই বললেই চলে। এ কারণে এই জলভূমির নাম মৃত-সাগর।
প্রাকৃতিক তত্ত্ব অনুযায়ী প্রায় ২ মিলিয়ন বছর পূর্বে উপত্যকা এবং ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী স্থলভাগ যথেষ্ট উচ্চতা লাভ করে। ফলে মহাসাগরের প্লাবনে এই অঞ্চলে সৃষ্ট উপসাগরটি পরিবেষ্টিত হয়ে হ্রদে পরিণত হয়।
এছাড়া পবিত্র কোরআন ও হাদিসে আছে, এ সাগরটি লুত নবীর দাওয়াত অস্বীকার করার কারণে এবং সমকামিতা পাপের দরুন, জিবরাঈল ফেরেশতা তার দু‘ডানা সাদুম ও এর আশপাশ এলাকার মাটিতে প্রবেশ করে সম্পূর্ণ এলাকাটি শূন্যে তুলে ধরে উপরকে নিচে এবং নিচকে উপরে তুলে সজোরে ফেলে দেন। ফলে যে সাগরের সৃষ্টি হয় তাই বর্তমান মৃত সাগর।
মূলত অতিরিক্ত লবণাক্ত পানির প্লবতা শক্তির কারণে এই সাগরে কোনো কিছু ডুবে না। যে কেউ মৃত সাগরের পানিতে ভেসে থাকতে পারে। প্রাচীনকাল থেকে এই হ্রদটি মিশরের মমি তৈরির জন্য, সার উৎপাদনের জন্য পটাশসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই হ্রদ থেকে প্রাপ্ত লবণ ও খনিজ পদার্থ বিভিন্ন প্রসাধনী ও সুগন্ধি দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
Discussion about this post