অনলাইন ডেস্ক
লুসিড ড্রিম বলতে এমন এক ধরনের স্বপ্ন বুঝায় যেখানে একজন মানুষ চাইলে স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তন করতে পারেন। একজন লুসিড ড্রিমার স্বপ্নের মাঝেও জেগে থাকেন এবং তিনি যে স্বপ্ন দেখছেন তা বুঝতে পারেন। স্বপ্ন দেখার সময় কোনো কিছুকে চিনে ফেলা হচ্ছে লুসিড ড্রিম এর প্রথম পর্যায়।
আমরা যখন স্বপ্নে কাউকে চিনে ফেলি তখন আমাদের মস্তিষ্কের ডোরোসোলেটারাল প্রিফ্রন্টাল কটেক্স- এ সাড়া জাগে এবং তা ঘুমের রেম পর্যায়ে যেতে সাহায্য করে। এখন প্রশ্ন হলো ঘুমের রেম পর্যায় আবার কি? এই পর্যায়ে কেন মানুষ লুসিড ড্রিম দেখে?
মানুষ গড়ে প্রতিদিন ঘুমের মাঝে ৪ থেকে ৬ বার স্বপ্ন দেখে। আমাদের ঘুমকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। একটি হলো র্যাপিড আই মুভমেন্ট (রেম) এবং অন্যটি হলো নন রেপিড আই মুভমেন্ট (নন-রেম)। মানুষ সাধারণত ঘুমের রেম পর্যায়েই লুসিড ড্রিম দেখে। ঘুমের এই সময়ে আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে সক্রিয় থাকে। লুসিড ড্রিম দেখার জন্য মানুষের মস্তিষ্কের ল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স দায়ী। মস্তিষ্কের এই অংশ মানুষের যুক্তিতর্ক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। রেম ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্কের ল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স সাধারণত নিষ্ক্রিয় ই থাকে। কিন্তু অনেক সময় এই অংশটি সক্রিয় থাকে যার ফলে আমরা যুক্তি দিয়ে বিচার করে স্বপ্ন দেখি এবং তা নিজের মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা লুসিড ড্রিম ঘটাতে পারি। এতোক্ষণে আমরা জেনেছি যে লুসিড ড্রিম হয় ঘুমের রেম পর্যায়ে, এই সময়ে মস্তিষ্ককে সজাগ রাখলে লুসিড ড্রিম দেখা যাবে। এর জন্য আপনার একবার ঘুমানোর ঠিক পাঁচ ঘন্টা পর জেগে উঠতে হবে, তারপর আবার ঘুমিয়ে পড়তে হবে। এর ফলে আপনি সরাসরি ঘুমের রেম পর্যায়ে চলে যাবেন এবং লুসিড ড্রিম দেখতে পারবেন।
অন্য একটি পদ্ধতি হলো MILD (Mnemonic Induction of Lucid Dreams)। এটি এক ধরনের আবেশ পদ্ধতি। এক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে মনে বার বার বলবেন ‘আমি আজ লুসিড ড্রিম দেখবো’।
এছাড়া আরো একটি পদ্ধতি হচ্ছে নিজের দেখা স্বপ্নগুলো ডায়েরি তে লিখে রাখা এবং প্রতিদিন একবার করে সেগুলো পড়া। এইসব পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনার লুসিড ড্রিম দেখার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
তবে যাদের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে তাদের জন্য লুসিড ড্রিম ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ ঘুমানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়া, কিন্তু লুসিড ড্রিম এর ফলে আপনি ঘুমের মাঝেও জেগে থাকবেন। যা আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলবে। এর ফলে যারা বিষণ্ণতায় ভুগেন তাদের জন্য এবং সাধারণ মানুষের জন্যও লুসিড ড্রিম ক্ষতিকর।
Discussion about this post