অনলাইন ডেস্ক
নিজের বা অন্যের প্রয়োজনে আমরা কমবেশি হাসপাতালে যাই। হাসপাতালে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় অস্ত্রোপচারের ঠিক আগে ডাক্তাররা একটি সবুজ পোশাক পরে নেন। কখনো কখনো নীল পোশাকেও দেখা যায় তাঁদের।
তবে লাল বা হলুদ পোশাক পরতে খুব কম ডাক্তারকেই দেখা যায়। তখন হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কেন এমনটা হয়? আসল কথা হলো- এর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান।
সাধারণত মানুষের চোখের কোষ প্রধানত তিন প্রকার রঙের হয়ে থাকে – লাল, সবুজ ও নীল। এই ধরনের কোষের সংখ্যা ৬০-৭০ লক্ষ। যার মধ্যে ৪৫ শতাংশই সবুজ। তাই সবুজ রঙে আরাম বোধ হয় চোখে। অপরদিকে, লাল কোষের সংখ্যা সবচেয়ে কম থাকায় লাল চোখকে ধাঁধিয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অপারেশন থিয়েটার মানেই রক্ত নিয়ে কাজ। একেকটি অপারেশনের সময়সীমাও কম নয়। দীর্ঘসময় লাল রঙ চোখে অস্বস্তিতে ফেলে, বিভ্রম সৃষ্টি করতে পারে। তখন চারপাশের সবুজ রং ও পোশাকের সবুজ তাদের চোখকে আরাম দেয়।
অন্যদিকে, একটু লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে যে যখনই কোনো আলোকিত জায়গা থেকে সামান্য অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করা হয় তখনই চোখের সামনে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে সবুজ বা নীল রংয়ের সংস্পর্শে এলে বেশ স্বস্তি পাওয়া যায়। অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।
সেন্ট ফ্রান্সিস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন বিকাশ মিশ্র। রং বিষয়ে এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সবুজ এবং নীল রং আলোর বর্ণালীতে লালের বিপরীতে অবস্থিত। সার্জারির সময় সার্জনের মনোযোগ বেশিরভাগ লাল রংয়ের দিকেই থাকে। কাপড়ের সবুজ এবং নীল রং থাকলে সার্জনের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে এবং চোখকে লালের প্রতি আরো সংবেদনশীল করে তোলে।
তবে অনেক জায়গায়, সার্জনরা অস্ত্রোপচারের সময় নীল এবং সাদা পোশাকও পরেন। তবে সবুজই সবচেয়ে উপযুক্ত কারণ এতে রক্তের দাগ বাদামি দেখা যায়। ডাক্তারদের নীল বা সবুজ পোশাক পরার রেওয়াজ যে শুরু থেকেই ছিল তা নয়। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আগে চিকিৎসক ও হাসপাতালের সব কর্মীরা সাদা পোশাক পরতেন। কিন্তু ১৯১৪ সালে এক ডাক্তার এটিকে সবুজে পরিবর্তন করেন। তারপর থেকেই সবুজ পোশাক পরার প্রবণতা বাড়তে দেখা যায়। অবশ্য আজকাল কিছু ডাক্তাররা নীল পোশাকও পরে থাকেন।
Discussion about this post