কোনো কিছুর রং না থাকলে আমরা প্রায়ই বলি, পানির মতো রং নেই। কথাটা কি আসলেই ঠিক? পানিরও কিন্তু রং আছে। কিন্তু সে রং এতটাই হালকা, অল্প পানিতে এ রং দেখাই যায় না। পানির রং হলো হালকা নীল। যদি একবারে অনেক পানি নিয়ে সেটাকে পুরোপুরি বিশুদ্ধ করা যায়, তখনই পানির এই হালকা নীল রং দেখা যাবে।
তবে সচরাচর যেসব পানির দেখা মেলে, আর যে পানি খাওয়া হয়, ওগুলোর কোনোটাই পুরোপুরি বিশুদ্ধ নয়। ওগুলোতে কত যে উপাদান মিশ্রিত থাকে! খাওয়ার পানিতে তো ফিল্টার করতে গিয়েই নানা খনিজ পদার্থ মেশানো হয়। আবার নদ-নদী, খাল-বিল আর সাগরের যে পানি, তাতে যে এমন কত পদার্থ আছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। সঙ্গে আছে মাছ, আরো হাজারো জলজ প্রাণী, জলজ গাছপালা, ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী, প্ল্যাংকটন, আরো কত কি। পানিতে যখন এসব থাকে, তখন সেগুলোর উপস্থিতির জন্য পানির আসল রং আর দেখাই যায় না। তখন কখনো পানির রং মনে হয় নীল, কখনো মনে হয় লালচে, কখনো মনে হয় সবুজ, কখনো বা আবার মনে হয় কালো।
আবার সাগর, কিংবা বিশাল কোনো লেক, বা এপার-ওপার দেখা যায় না এমনই বড় নদীর বেলাতে, ওগুলোর বুকে আকাশের ছায়া দেখা যায়। কারণ, ওগুলোতে তো পানির উপরিতলটা অনেক বড়। আর আকাশের সঙ্গে পানির উপরিতলের দূরত্বও অনেক বেশি। ফলে পানির উপরিতল অমসৃণ হলেও তখন সুন্দর মসৃণ একটা তলের কাজ করে। আর তখন আয়নায় যেমন আমরা মুখ দেখি, পানির উপরিতলেও আকাশের মুখ দেখা যায়। তাই ওসব জায়গায় পানির রং প্রায়ই নীল মনে হয়।
Discussion about this post