অনলাইন ডেস্ক
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় আইআইজিগুলো (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) ‘পপ’ (পয়েন্ট অব প্রেজেন্স) স্থাপন করবে। সেখান থেকে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো (আইএসপি) ব্যান্ডউইথ নিয়ে ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট সেবা দেবে।
গত ৪ আগস্ট ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। শনিবার (৭ আগস্ট) টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি পৃথক দুটি বৈঠকে (আইএসপিএবি ও আইআইজি ফোরামের সঙ্গে) এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। শিগগিরই বিটিআরসি এই বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এতদিন আইআইজিগুলোর ‘পপ’ ছিল রাজধানীকেন্দ্রিক। রাজধানী থেকে ঢাকার বাইরের আইএসপিগুলো এনটিটিএন (ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা) প্রতিষ্ঠানকে ব্যান্ডউইথ পরিবহনের জন্য ট্রান্সমিশন চার্জ দিতো। এতে করে আইএসপিগুলোর ব্যান্ডউইথ ট্রান্সমিশন চার্জ বেশি দিতে হতো। ফলে আইএসপিরা কম দামে গ্রাহককে সেবা দিতে পারতো না।
এজন্য সরকারের এক দেশ এক রেট কার্যক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে আইআইজিগুলো এনটিটিএনকে ট্রান্সমিশন চার্জ দিয়ে জেলা পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ পৌঁছাবে। জেলার পপ থেকে আইএসপিগুলো তাদের ব্যবস্থাপনা জেলা শহরে সেবা দেবে। উপজেলা বা ইউনিয়নে সেবা দিতে চাইলে এনটিটিএন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ পরিবহন করবে।
এ বিষয় জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘‘বিটিআরসি থেকে প্রস্তাবটি আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি। এটি দেশে ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে ‘এক দেশ এক রেট’ বাস্তবায়ন সহজ হবে।’’
এ বিষয়ে আইআইজি ফোরামের মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ বলেন, ‘সরকারের নির্দেশ আমরা যথা সময়ে বাস্তবায়ন করবো। সরকার প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবহারকারীদের কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এতে করে জেলা পর্যায়ের আইএসপিগুলো নিজ জেলা থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে তার গ্রাহকদের নিরবিছিন্ন ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো দূরবর্তী ও ছোট ছোট জেলা এবং যেসব জেলায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কম। সেসব জেলায় সব আইআইজি পপ স্থাপন করলে তা কতটা বাস্তবসম্মত হবে সেটাই এখন বিবেচ্য।’
প্রসঙ্গত, দেশে ৩৪টি আইআইজি প্রতিষ্ঠান আছে। বর্তমানে সচল আছে ২৯টি বলে জানা গেছে।
দেশে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘এই নিয়ম কার্যকর হলে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে ব্যান্ডউইথ ট্রান্সমিশন চার্জ কম লাগবে। সরকার ইন্টারনেট সেবায় এক দেশ এক রেট (৫ এমবিপিএস ৫০০ টাকা, ১০ এমবিপিএস ৮০০ টাকা এবং ২০ এমবিপিএস ১ হাজার ২০০ টাকা) ঘোষণা করলেও অনেকগুলো কারণে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিলো না।
সরকার আইআইজির জন্য বিভিন্ন ভলিউমে ১১টা স্ল্যাবে ব্যান্ডউইথের দাম ও এনটিটিএনগুলোর জন্য ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটির ভলিউম অনুযায়ী ১৫টি স্ল্যাবে সেবামূল্য বেঁধে দিয়েছে। জেলা জেলায় আইআইজিগুলোকে পপও স্থাপন করতে বলেছে। এসবই গ্রাহকদের জন্য এক দেশ এক রেটে ইন্টারনেট সেবা পেতে সহায়ক হবে।’
Discussion about this post