প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রযুক্তি নির্ভর দুনিয়ায় ইন্টারনেট সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। ইন্টারনেট এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। বাসা কিংবা অফিস সবখানেই ইন্টারনেটের সম্পৃক্ততা। রাস্তাঘাটে মোবাইলের ডাটা খরচ করলেও বাসায় অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ওয়াইফাই ব্যবহার করে থাকেন সবাই। এতে যেমন ইন্টারনেটের স্পিড ভালো পাওয়া যায় তেমনি সাশ্রয়ীও বটে।
এমনকি কোথাও বেড়াতে গেলেও সেখানকার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডটা চেয়ে নেন অনেকে। তবে এটি একেবারেই ঠিক নয়। কাউকে আপনার বাসায় ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড দেবেনও না এবং কারোটা নেবেনও না। খুব বেশি প্রয়োজন হলে মোবাইলের ডাটা ব্যবহার করুন।
আপনার বাসায় যে ওয়াইফাই রাউটারটি ব্যবহার করছেন, তার একটি ইউনিক ম্যাক (মিডিয়া অ্যাক্সেস কন্ট্রোল) অ্যাড্রেস রয়েছে। আপনি বাসার ওয়াইফাই রাউটার ব্যবহার করে যা কিছু ব্রাউজ বা ডাউনলোড/আপলোড করেন, সবকিছুই ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের লগ সার্ভারে আপনার ম্যাক অ্যাড্রেসসহ জমা থাকে এবং তারা নিয়মিত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কে এই লগ প্রদান করে।
তাই আপনার বাসার ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে যদি কোনো অপরাধ সংঘঠিত হয়, তখন এই ম্যাক অ্যাড্রেসের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনাকে খুঁজে বের করা সম্ভব। যেহেতু আপনার বাসার ইন্টারনেটের সব অ্যাক্টিভিটির দায়ভার আপনার। সুতরাং ইন্টারনেট ব্যবহারে সতর্ক হোন।
যারা ভাবছেন মোবাইল ডাটা ব্যবহার করলে কোনো সমস্যা নেই, তাদের জেনে রাখা ভালো মোবাইলেরও ইউনিক ম্যাক অ্যাড্রেস, ইএমআই এবং সিম নম্বরের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনাকে খুঁজে বের করা সম্ভব।
মনে করুন আপনার বাসায় বেড়াতে আসা কেউ আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলেন। এবার সেটা ব্যবহার করে কোনো পর্ন সাইট ব্রাউজ, জঙ্গি কার্যক্রম কিংবা ধর্মীয় উসকানিমূলক/রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট-কমেন্টস, ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন, কপিরাইট কন্টেন্ট ডাউনলোড, ডার্কওয়েব ব্রাউজ কিংবা অন্যকোনো অপরাধমূলক কাজ করলেন।
এতে কিন্তু আপনিই বিপদে পড়বেন। সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম আসবে আপনার দোরগোঁড়ায়। আসলে আপনার ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড, অনেকটা আপনার বাসার মূল ফটকের চাবির মতো।
যা অন্যের কাছে থাকা মানে, সে আপনার অগোচরে যে কোনো সময় বাসায় ঢুকে প্রাইভেসি নষ্ট, চুরি কিংবা কোনো অপরাধ সংঘঠিত করে বিপদে ফেলতে পারে।
তাই কেউ ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড চাইলে, তাকে মার্জিতভাবে বিষয়টি বুঝিয়ে মোবাইল ডাটা ব্যবহার করার পরামর্শ দিন। তাকেও অন্যের সঙ্গে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড শেয়ারের বিষয়ে সচেতন করুন।
আরও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন-
> একটু কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। নাম, মোবাইল নম্বর, জন্ম তারিখ/সাল, অর্থপূর্ণ শব্দসহ সহজে অনুমান করা যায়। তাই এগুলো পাসওয়ার্ড দেওয়া বাদ দিন।
> কিছুদিন পর পর ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন। এক মাস অন্তর অন্তর করতে পারেন।
> ওয়াইফাই রাউটারের ডিফল্ট পাসওয়ার্ড শিগগিরই পরিবর্তন করুন এবং পাসওয়ার্ড নিজের কাছে রাখুন।
> সম্ভব হলে মাঝে মাঝে রাউটারে লগইন করে স্ট্যাটিস্টিক চেক করুন, অপরিচিত কেউ আপনার ইন্টারনেট ব্যবহার করছে কি না দেখুন।
Discussion about this post